১০ ট্রাক অস্ত্র: ডিজিএফআই’র রুমির জেরা শুরু

চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলার ষষ্ঠ সাক্ষী প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সাদিক হাসান রুমিকে আবারো জেরা শুরু করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 April 2012, 01:58 AM
Updated : 3 April 2012, 01:58 AM
চট্টগ্রাম, এপ্রিল ০৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলার ষষ্ঠ সাক্ষী প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সাদিক হাসান রুমিকে আবারো জেরা শুরু করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমানের আদালতে এ মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।
এর আগে গত ১৫ মার্চ এ মামলায় দেওয়া সাক্ষ্যে সাদিক হাসান রুমি আদালতকে বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের ‘চাপেই’ ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনা তদন্তে গঠিত সরকারি কমিটিতে রেজ্জাকুল হায়দারকে মনোনীত করা হয়।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল গভীর রাতে বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) অধীন সিইউএফএলর সংরক্ষিত জেটি ঘাটে খালাসের সময় ১০ ট্রাক সমপরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ আটক করে পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করে।
তখনকার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবরের সঙ্গে থেকে পরদিন চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইনে জব্দ করা অস্ত্র ও গোলাবারুদ পরিদর্শন করেন রুমি।
জবানবন্দিতে তিনি বলেন, “পরিদর্শন শেষে দামপাড়ায় এক বৈঠকে বাবর সাহেব বলেন, কমিটি করে ঘটনার তদন্ত করা হবে এবং তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা থেকে আমাকে বিরত থাকতে বলেন তিনি।”
“সভার আলোচনায় বুঝতে পারি, এটি ছোটখাট কোনো চোরাচালান নয়, এর সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারেন,” বলেন তিনি।
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান বলেন, পরদিন (৩ এপ্রিল, ২০০৪) সকালে অস্ত্র গোলাবারুদ পরিদর্শন সম্পর্কে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জানানো হয়। তিনি একটি তদন্ত কমিটি করা হবে বলে জানান। সেখানে একজন প্রতিনিধি দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি।
“ওই দিন দুুপুরে বাবর সাহেব ফোন করে ডিজিএফআই’র তৎকালীন পরিচালক (সিবিআই) রেজ্জাকুলকে প্রতিনিধি মনোনীত করতে বলেন। আমি অন্য কাউকে করার অনুরোধ করি। উনি বারবার চাপ দিলে রেজ্জাকুলকে প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দিই,” বলেন রুমি।
আদালতে সাদিক হাসান রুমি ১০ ট্রাক সমপিরমাণ অস্ত্র আটকের ঘটনায় করা অস্ত্র ও চোরাচালান উভয় মামলায় সাক্ষ্য দেন।
ডিজিএফআইর তৎকালীন পরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী পরবর্তীতে এনএসআইর মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কারাগারে আছেন।
রুমি তার জবানবন্দি শেখ করার পর ১৫ মার্চ তাকে জেরা শুরু করেন রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর আইনজীবী। এরপর মামলার কার্যক্রম ৩ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
এ মামলার আসামিরা হলেন- জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, এনএসআইর সাবেক দুই প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, সাবেক পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) শাহাবুদ্দিন, সাবেক উপ-পরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, সিইউএফএলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তাালুকদার ও সাবেক জিএম (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, চোরাকারবারি হাফিজুর রহমান ও দীন মোহাম্মদ।
এ মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্রভুক্ত অপর দুই আসামি সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্প সচিব নুরুল আমিন ও উলফা কমান্ডার পরেশ বড়–য়া পলাতক আছেন।
গত বছরের ২৯ নভেম্বর বহু আলোচিত এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমসি/জেকে/১৭৩৩ ঘ.