ঢাকা, জুলাই ২৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সরাসরি জড়িত ১১ জনকে চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি।
এদের মধ্যে সরকারের প্রকাশনা সংস্থার (বিজি প্রেস) ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারী কর্ম কমিশনের একজন কর্মকর্তা এবং চারজন বহিরাগত রয়েছে।
রোবরার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন গ্রহণ করে শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত কমিটি যাদেরকে সরাসরি জড়িত বলে চিহ্নিত করেছে তারা হলেন- বিজি প্রেসের কম্পোজিটর শহিদুল ইসলাম ফকির, এটিএম মোস্তফা, বাইন্ডার লাবণী বেগম, মো. হামিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক খন্দকার মোহাম্মদ আলী, ফরমা প্রুফরিডার মো. আব্দুল জলিল ও সরকারী কর্মকমিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রউফ।
বহিরাগতদের মধ্যে রয়েছেন- নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মাহফুজার রহমান, আরিফ, আতিকুল ইসলাম ও মো. শাফিয়ার রহমান। শেষের তিনজন পর্যটন কেন্দ্র বুকিং দিয়েছিলেন।
গত ৯ জুলাই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত সচিব মো. এস এম গোলাম ফারুককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটিকে ১০দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
৮ জুলাই রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার একটি পর্যটন কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ১৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরীক্ষার একদিন আগে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করে।
ওই পরীক্ষায় সারাদেশে মোট ১ লাখ ৩২ হাজার পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণ করার কথা ছিল।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "নিরাপত্তার সব দিক বিবেচনা করেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ঘটেনি, ঘটেছে বিজি প্রেস থেকে। কমিটি প্রাথমিক ভাবে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ১১ জনকে চিহ্নিত করেছে। তবে ঘটনার আড়ালে অনেকেই রয়েছে।"
প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা দ্রুত ধরতে পারায় রংপুরের পুলিশ প্রশাসনসহ অন্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, "এই কমিটির পক্ষে যতটা সম্ভব তা তারা করেছে। এই ঘটনার গভীরে যারা জড়িত তাদের ধরতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রলায়সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে উদ্যোগ নিতে হবে।"
৫৬ পৃষ্ঠার সংযোজনীসহ তদন্ত প্রতিবেদনের পৃষ্ঠার সংখ্যা ৮৮। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য বিজি প্রেসের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থানা জোরদার করাসহ ১৫ দফা সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
নাহিদ বলেন, "প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আমরা কঠোর শাস্তি চাই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ প্রশাসন ও বিভিন্ন এজেন্সির প্রতি আহ্বান জানাই, এই চক্রকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনুন। না হলে ভবিষ্যতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিপর্যয় ঘটতে পারে।"
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, "একজন ব্যক্তি এমন অনৈতিক পথে যদি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যান, সেটা হবে জাতির জন্য ভয়ঙ্কর বিষয়। তার কাছ থেকে ভবিষ্যত প্রজন্ম কী নৈতিকতা শিখবে বা ওই শিক্ষক কী শেখাবেন?"
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/পিসি/এইচএ/১৮০৪ ঘ.