বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় ঘোষণার আট বছর পর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল কার্যতালিকায় এলেও এক আবেদেনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানির জন্য ১৮ অক্টোবর দিন রেখেছে হাই কোর্ট।
Published : 20 Jul 2022, 08:48 PM
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বুধবার বিচারপতি শহিদুল করিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ তারিখ ঠিক করেন।
মামলা শুনানিতে অংশ নিতে প্রস্তুতির জন্য সময় চেয়ে আদালতে আবেদন জানান সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস।
পরে নির্মল দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটি একটি বড় মামলা, তাই এই মামলার শুনানিতে ব্যাপক প্রস্তুতি থাকা দরকার। আমরা প্রস্তুতির জন্য সময় চেয়ে কোর্টে আবেদন জানালে এ বিষয়ে শুনানির পর আগামী ১৮ অক্টোবর এ মামলার ওপর শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেছে আদালত।”
২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ১০ ট্রাক অস্ত্রের চোরাচালানের ঘটনায় দুই মামলায় চট্টগ্রামের একটি আদালতে রায় হয়। এরপর একই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মামলার রায় ও অন্যান্য নথি অনুমোদনের জন্য নিয়ম অনুযায়ী হাই কোর্টে আসে।
দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় করা চোরচালান মামলার রায়ে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ মোট ১৪ জনের ফাঁসির রায় দেন চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মজিবুর রহমান।
এই ১৪ জনের মধ্যে এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আবদুর রহীম এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াও রয়েছেন।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল মধ্যরাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কর্ণফুলী নদী তীরে রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সংরক্ষিত জেটিঘাটে দুটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র খালাস করে ট্রাকে তোলার সময় পুলিশ আটক করে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদের সর্ববৃহৎ চালান ধরা পড়ার পর দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
পরে তদন্তে দেখা যায়, চীনের তৈরি এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সমুদ্রপথে আনা হয় ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘উলফা’র জন্য। বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ওই চালান ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
অস্ত্র উদ্ধারের পর ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগে একটি এবং ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনে অন্য মামলাটি দায়ের করা হয়।
ওই দুই মামলায় আসামি ছিলেন মোট ৫২ জন, তাদের মধ্যে ৩৮ জনকে খালাস দেয় চট্টগ্রামের আদালত।
চোরাচালান মামলায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ বি ও ২৫ ডি ধারায় ১৪ আসামির ফাঁসির রায় আসে। একইসঙ্গে হাই কোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে তাদের ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
আর অস্ত্র আইনের ১৯ এ ধারায় ওই ১৪ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এছাড়া অস্ত্র আইনের মামলার ১৯ এফ ধারায় তাদের দেওয়া হয় সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড।