ময়মনসিংহে ট্রাকচাপায় একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার চালক রাজু আহমেদ শিপনের ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্স ছিল না; আর ট্রাকটির ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস সার্টিফিকেটও ছিল না বলে র্যাবের ভাষ্য।
Published : 19 Jul 2022, 06:21 PM
মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত শনিবার দুপুরে ত্রিশাল পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ওই দুর্ঘটনায় উপজেলার রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) এবং মেয়ে সানজিদা খাতুন (৬) মারা যায়। মৃত্যুর আগে রত্না বেগম সড়কেই এক নবজাতকের জন্ম দেন। শিশুটিকে নিয়ে কয়েকদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে শোরগোল চলছে।
দুর্ঘটনার পরপরই শিপন (৪২) বাস-ট্রাকে করে পালিয়ে সাভারে আশ্রয় নেয় জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, সেখান থেকে তাকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
“দুর্ঘটনার পর উত্তেজিত লোকজন ট্রাকটি থামালে সুযোগ বুঝে শিপন ঢাকাগামী একটি বাসে উঠে ময়মনসিংহ বাইপাসে নামে। সেখান থেকে একটি সিএনজি করে প্রথমে মুক্তাগাছা যায়। সেখান থেকে অপর একটি বাসে করে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা গিয়ে পরিচিত ট্রাক চালকদের সহায়তায় আত্মগোপনে থাকে। পরে অপর একটি ট্রাকে করে সাভারে যায়।”
“আবার ওই ট্রাকেই রাজশাহীর নওহাটা থেকে আরেক দফায় আলু বোঝাই করে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে রাত ১২টার সময় রওনা দেয়। পথে সে হালকা বিরতি নিয়ে দুর্ঘটনার পূর্ব পর্যন্ত একটানা গাড়ি চালিয়ে আসছিল।”
গ্রেপ্তারের পর শিপন র্যাবকে বলেছে, দুর্ঘটনার সময় তার সহকারী ঘুমাচ্ছিলেন। টানা ট্রাক চালানোর কারণে তিনিও ছিলেন ক্লান্ত। আর পেছন থেকে একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে বামে চাপাতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
কমান্ডার মঈন জানান, ২০০২ সালে যশোরে এক দুর্ঘটনায় ট্রাক চালকের সহকারী হিসেবে গুরুতর আহত হন শিপন। এজন্য ৬ বছর গাড়ির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। পরে তিনি একটি হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স করে ট্রাক চালানো শুরু করেন। সেই লাইসেন্স প্রায় ৬ বছর আগে হারিয়ে যাওয়ার পর লাইসেন্স ছাড়াই রাস্তায় ট্রাক নিয়ে চলছিলেন।
“গত ১০-১২ বছর ধরে সে এভাবে চালকের কোনো কাগজপত্র ছাড়াই নিয়মিত ট্রাক চালিয়ে আসছিল।”
ট্রাক মালিকের কাছ থেকে ভাড়ার ১০ শতাংশ কমিশনের ভিত্তিতে শিপন চালক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন বলে র্যাবকে জানিয়েছেন।
ট্রাকটির ধারণ ক্ষমতা ৭ টন হলেও দুর্ঘটনার সময় মালামালসহ গাড়িটির ওজন সাড়ে ১৩ টন ছিল বলে জানিয়েছেন র্যাব কর্মকর্তা মঈন।
আরও পড়ুন