ট্রাক চাপায় তিন নিহতে মামলা, চিকিৎসাধীন নবজাতক

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাক চাপায় এক পরিবারের তিনজন নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2022, 02:57 PM
Updated : 18 July 2022, 02:57 PM

ত্রিশাল থানার ওসি মাইন উদ্দিন জানান, রোববার রাতে নিহত জাহাঙ্গীর আলমের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে ত্রিশাল থানায় মামলা করেছেন।

আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

অপরদিকে ওিই দুর্ঘটনার সময়ই নিহত রত্না আক্তারের ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক ময়মনসিংহ নগরীর লাবীব প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার ডান হাত দুই স্থানে ভেঙে যাওয়ায় পুরোপুরি সুস্থ হতে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

বাংলাদেশ কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডের সহযোগী অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান বলেন, নবজাতকটি পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। তার শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে। ডান হাতের দুই জায়গায় প্লাস্টার করা হয়েছে।

“শিশুটি নিয়মিত খাবারের পাশাপাশি প্রসাব পায়খানাও করছে। অন্য মায়ের দুধ শিশুটিকে খাওয়ানো হচ্ছে। ইচ্ছা করলে আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে বাড়ি চলে যেতে পারবে।”

লাবীব হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সেবিকা সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, “শিশুটি শান্তশিষ্ট প্রকৃতির। আমরা দুইজন নার্স ও দুইজন আয়া নিয়মিত তার পরিচর্যা করছি। মাঝে মধ্যে কান্না করলে কোলে নিলে ঠিক হয়ে যায়। খাবারদাবারও তার ঠিক রয়েছে।”

লাবীব প্রাইভেট হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে আমার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এখন তার নাম রেখে আকিকা দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছি। সব হারানো শিশুটি আমার পরিবারের আপনজন হয়ে উঠেছে। শিশুটিকে এক মুহূর্তও চোখের আড়াল করতে পারছি না।”

তিনি আরও বলেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিশুটির সমস্ত দায়ভার নিয়েছে। তবে অনেকে সহযোগিতার কথা বললেও কেউ এখনও এগিয়ে আসেনি।

“তবে নবজাতকটি নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সহযোগিতার প্রয়োজন নবজাতকের এক ভাই ও বোনের।”

গত শনিবার দুপুরে ত্রিশালের কোর্টভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা নিহত। এ সময় অলৌকিকভাবে ভূমিষ্ঠ হয় এই শিশু।

পুলিশ ও আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। 

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতকটিকে ময়মনসিংহ সদরের সিবিএমসিবি হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে নগরীর লাবীব হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।