শুক্রবার জুমার নামাজের পর উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের ৬/এ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ বলছে, মোটরসাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে, পরে বিষয়টি ‘মিটমাট’ হয়ে যায়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) এক সময়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক রতনের মেয়ে পূর্ণাভা সিদ্দিকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জুমার নামাজের সময় তার বাবা ও মা গাড়ি নিয়ে বাসায় ঢুকছিলেন।
“বাসার সামনে একটা স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ রয়েছে। বাসার ফটকের সামনে সবজির ভ্যান ও মোটরসাইকেল রেখে সড়ক আটকিয়ে রেখেছে। তাছাড়া মুসল্লিদের কারণে পুরো সড়ক বন্ধ প্রায়।”
পূর্ণাভা বলেন, “গাড়ির চালক দুইবার হর্ন দেওয়ার পর সেখানে নামাজে আসা মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। মা ও বাবা গাড়ি থেকে বের হয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়; বাবাকে ধাক্কা মারে ও পেটে আঘাত করে।”
তার ভাষ্য, “মায়ের কপালে টিপ পরা দেখে তারা সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলতে শুরু করে আর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। মা কোনোমতে বাসায় ঢুকে পড়লেও তারা বাড়ির ফটক প্রায় ভেঙে ফেলে।”
দীর্ঘ সময় পর পুলিশের সহায়তা পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “৯৯৯ এ ফোন দিচ্ছি, কিন্তু কোনো রেসপন্স পাচ্ছি না। পরে পরিচিত পুলিশ ও র্যাবকে ফোন করলে দেড় ঘণ্টা পর তারা আসে।
“পুলিশ আসার সঙ্গে সঙ্গে সবাই চলে যান, আর যারা এতক্ষণ উসকানি দিচ্ছিল- তারা বলতে শুরু করেন, কিছুই হয়নি, একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।”
হেনস্তার কথা বলতে গিয়ে রতনকন্যা পূর্ণাভা বলেন, “দেড় ঘণ্টায় সাম্প্রদায়িক এমন কোনো কথাবার্তা নেই যে তারা আমাদের বলেননি।”
কুকুরকে প্রায়ই খাবার দেন পূর্ণাভা, তা নিয়েও কথা শোনানো হয়েছে বলে জানালেন তিনি।
“মুসল্লিরা এই কথা বলেও বাড়িতে ঢিল মেরেছে। বলেছে, এই বাড়ির মেয়েরা কুকুর পালে-নাস্তিক।"
একটি চক্র বাসার গেইটের সামনে নিয়মিত বাজার, সবজিরভ্যান বসায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, “তারা নারায়ে তাকবির বলে স্লোগান দিচ্ছিল।”
ভারাক্রান্ত মনে পূর্ণাভা বলেন, “যে মানুষ সারাজীবন এই সমাজ পরিবর্তনের চেষ্টা করেছেন, রাজপথে থেকেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছেন, ধর্মান্ধতা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বলেছেন, আজকে তাদেরই হামলার শিকার হতে হয়েছে। “
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরার বিভাগের উপ কমিশনার মো. মোর্শেদ আলম বলেন, “রতন সিদ্দিকীর বাসা মসজিদের পাশে। জুমার দিন ছিল, সবাই বাসার সামনে মোটরসাইকেল, ভ্যান রেখে নামাজ পড়তেছিল।
“এ নিয়ে মুসল্লিদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। পরে বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায়।”