অনশন ভাঙাতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ‘না থাকায়’ সুলতান মনসুরের ‘উষ্মা’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব না থাকায় ‘উষ্মা’ প্রকাশ করেছেন গণফোরামের সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2022, 01:37 PM
Updated : 27 Jan 2022, 01:37 PM

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আন্দোলন নিয়ে সমাজকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।

“অধ্যাপক জাফর ইকবাল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙিয়েছেন। সেখানে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছিলেন না? ওই অঞ্চলে কী রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেই? তারা কী করেছেন?”

শাবিপ্রবি উপাচার্য মো.ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনের সপ্তম দিনে বুধবার সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।

এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, “জাফর ইকবাল ওনার ইচ্ছায় গেছেন তা মনে করি না। নিশ্চয়ই নেত্রী সেই ব্যবস্থাটি করেছেন।”

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।

হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগসহ সকল অব্যবস্থাপনা দূর করার দাবিতে এই আন্দোলেন পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডে অন্তত অর্ধশত আহত হন।

গণফোরামের সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। সেটা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করে একপর্যায়ে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

জাতীয় সংসদে আলোচনায় চলতি বছর রাজনীতির জন্য সঙ্কটকাল হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন গণফোরাম থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান মনসুর।

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, “২০২২ সাল ওমিক্রনের জন্য যেমন অত্যন্ত সংকটকাল, আমি মনে করি রাজনীতির জন্যও হবে একটি সংকটকাল। সংসদ নেত্রী এই বিষয়টি আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে।”

আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসু ভিপি সুলতান মনসুর সংস্কারপন্থী হওয়ার প্রেক্ষাপটে ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ থেকে ছিটকে পড়েন।

গত একযুগ ধরে তিনি সরকারের নানা সমালোচনা করেছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গণফোরামের মনোনয়ন পেয়ে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

দলের বিপক্ষে গিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ায় পরবর্তীতে গণফেরাম থেকে বহিষ্কৃত হন। সংসদে তাকে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করতে দেখা যায়।

এদিন সুলতান মনসুর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ধারাবাহিক প্রধানমন্ত্রী থাকার মধ্য দিয়ে যে উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি করেছেন, সেই উন্নয়নে বাধা সৃষ্টির জন্য অনেকে এদেশে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কাজেই যার কাজ তাকে দিয়ে সেটা করাতে হবে।”

নিজের অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমার রাজনৈতিক অবস্থান একরকম, বিশ্বাস একরকম, বর্তমান অবস্থান একরকম। সব মিলিয়ে আমাকে ইতিহাসের পক্ষে কথা বলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কথা বলতে হবে।”

তিনি বলেন, “রাজনীতিবিদদের মধ্য থেকে রাজনীতিকে এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু পরী মনি, খুকু মনি, দীপু মনি আর রুকু মনিদের কাহিনী পত্রিকায় পড়লে বাংলাদেশের বর্তমান নতুন প্রজন্ম হতাশ হয়। যাতে নেতৃত্ব ও সমাজ দূষিত হয় তার জন্য লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে পরী মনি আর খুকু মনিদেরকে। এটি একটি ষড়যন্ত্র।”

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে এই নেতা বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে ঘিরে যে অপবাদ উঠেছে। তা ‍মুক্ত করে রাজনীতির পরিবেশ সুন্দর করতে হবে।

আরও পড়ুন