নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মধ্যে তিন বছর আগে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে পুলিশের করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলার তদন্ত চলবে।
Published : 13 Dec 2021, 02:40 PM
মামলাটির বৈধতা প্রশ্নে ২০১৯ সালে আদালত যে রুল দিয়েছিল, তা খারিজ করে এবং তদন্ত কাজের ওপর স্থগিতাদেশ বাতিল করে সোমবার এই রায় দিয়েছে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ ।
আদালতে শহিদুল আলমের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম হাসান আরিফ ও সারা হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
তুষার পরে সাংবাদিকদের বলেন, “মামলাটির তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়ে হাই কোর্ট যে রুল দিয়েছিল, সে রুলটি খারিজ করে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট। এ রায়ের ফলে শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে এ মামলার তদন্ত চলতে কোনো বাধা নেই।”
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ২০১৮ সালের ৩ ও ৪ অগাস্ট জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেইসবুক লাইভে এসেছিলেন শহিদুল। ওই আন্দোলনের বিষয়ে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের সমালোচনাও করেন।
এরপর ৫ অগাস্ট শহিদুল আলমকে তার বাসা থেকে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তার নামে মামলা হয়।
প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাগারে থাকার পর ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান শহিদুল।
পরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ তিনি হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ রুলসহ আদেশ দেয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযু্ক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা মামলাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং সংবিধানের ৩১ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় কেন তা আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
সেই সঙ্গে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রমও স্থগিত করে দেয় হাই কোর্ট। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে গেলে ২০১৯ সালের ১৯ অগাস্ট সর্বোচ্চ আদালত হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রেখে রুলটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়।
সেই ধারাবাকিতায় আড়াই বছর পর রুল খারিজ করে রায় দিল হাই কোর্ট।