মামলাটির তদন্ত প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শহিদুল আলমের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুলসহ এই আদেশ দেয়।
আদালতে শহিদুলের পক্ষে শুনানি করেন এ এফ হাসান আরিফ ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে গত বছরের ৬ অগাস্ট তথ্য ও যোগাযোগ প্রযু্ক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা মামলাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং সংবিধানের ৩১ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় কেন তা আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, রমনার ওসি, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (উত্তর) পরিদর্শক মো. মেহেদী হাসান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (উত্তর) পরিদর্শক আরমান আলী এবং ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত গতবছরের ৩ ও ৪ অগাস্ট জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেইসবুক লাইভে এসেছিলেন শহিদুল। ওই আন্দোলনের বিষয়ে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের সমালোচনাও করেন।
এরপর ৫ অগাস্ট শহিদুল আলমকে তার বাসা থেকে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তার নামে মামলা হয়।
প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাগারে থাকার পর গত বছরের ২০ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান শহিদুল। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৩ মার্চ তিনি হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন।
ওই রিটোর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত মঙ্গলবার শহিদুল আলমের মামলার নথি তলব করে। বৃহস্পতিবার সেই নথি দেখার পর হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম পরে সাংবাদিকদের বলেন, এ আদেশের বিরুদ্ধে তারা আপিল বিভাগে আবেদন করবেন।
অন্যদিকে সারা হোসেন বলেন, “আমাদের মূল বিষয়টা ছিল যে, উনার বিরুদ্ধে যখন মামলাটি হয় তখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনটি ছিল। পরে আইনটির ৫৭ ধারা বাতিল করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়। ওই আইনে বলা হয়েছে, সাইবার ট্রাইব্যুনালে যদি কোনো মামলা সূচিত বা গৃহিত হয়, তবে সেগুলো চলবে। অন্য কিছু চলার কোনো এখতিয়ার নতুন আইনে রাখা হয়নি।
“সেই প্রেক্ষিতে আমরা বলেছি, শহিদুল আলমের মামলাটি যেহেতু এখনও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তদন্তাধীন, এখন পর্যন্ত যেহেতু ট্রাইব্যুনালে যায়নি, তাই এ মামলাটি আসলে রক্ষা করা হয়নি। মামলাটি যেহেতু পাকেনি আমরা বলেছি মামলাটি নষ্ট হয়ে গেছে। সেই প্রেক্ষিতে আদালত মামলার তদন্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন এবং রুল জারি করেছেন।”