সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার মারা গেছেন।
Published : 27 Oct 2021, 09:56 AM
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বাসেত মজুমদার ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য।
বুধবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে তার ছেলে অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা জানান।
৮৩ বছর বয়সী বাসেত মজুমদার মেরুদণ্ডের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ফুসফুসের জটিলতা দেখা দিলে গত ২৩ অক্টোবর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সাঈদ আহমেদ রাজা জানান, এর মধ্যে হার্ট অ্যাটাক হলে ২৪ অক্টোবর তার বাবাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। বুধবার সকালে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর এই সদস্যের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৩৮ সালের ১ জানুয়ারি কুমিল্লার লালমাই (সে সময় ছিল লাকসামের অধীনে) উপজেলার শানিচোঁ গ্রামে আব্দুল আজিজ মজুমদার ও জোলেখা বিবির সংসারে বাসেত মজুমদার জন্ম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি নেওয়ার পর তিনি আইন পেশায় যোগ দেন এবং ১৯৬৭ সালে ঢাকা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
২০০১-০২ মেয়াদে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করার আগে ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন বাসেত মজুমদার।
বাংলাদেশে আইনজীবীদের তদারককারী কর্তৃপক্ষ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যানের পদেও তিনি দুই মেয়াদে ছিলেন।
অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় আইনপেশায় নিয়োজিত বাসেত মজুমদার এক দিকে দুস্থ আইনজীবীদের জন্য একটি ট্রাস্ট ফান্ড করেছিলেন, অন্যদিকে বহু মানুষকে বিনা পারিশ্রমিকে আইনি সহায়তা দেওয়ায় পরিচিতি পেয়েছিলেন ‘গরিবের আইনজীবী’ হিসেবে।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ আইনি বিষয়ে তিনি আদালতকে সবসময় সহযোগিতা করেছেন।
“তিনি ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। দরিদ্র মানুষের আইনজীবী হিসেবে তিনি ব্যপকভাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি জুনিয়র আইনজীবীদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছেন। জাতি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে তাকে স্মরণ রাখবে।”
দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে পেশাগত ও রাজনৈতিক সহকর্মী, বিচারক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও সাধারণ মানুষের ফুলেল শ্রদ্ধায় বিদায় জানানো হয় বাসেত মজুমদারকে।
জানাজায় অংশ নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ সর্বোচ্চ আদালতের উভয় বিভাগের বিচারপতি, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন,ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
সাঈদ আহমেদ রাজা জানান, কুমিল্লায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে সেখানে আরেক দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবাকে দাফন করা হবে।