কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরীকে শেষ বিদায়

বাংলা একাডেমিতে কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরীর কফিনে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রতিনিধিরা।

ক্যান্সারে আক্রান্ত বুলবুল চৌধুরী শনিবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে তার বাসায় মারা যান। একুশে পদকপ্রাপ্ত এই সাহিত্যিকের বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

রোববার সকাল ৯টায় বাংলাবাজারের প্যারীদাস রোডের শিমতলা মসজিদে জানাজা শেষে বেলা ১১টায় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার কফিন নিয়ে আসা হয় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে।

সেখানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ  প্রয়াত এই কথাসাহিত্যিকের কফিনে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব অসীম কুমার দে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার নেতৃত্বে পরিচালক, উপপরিচালক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বুলবুল চৌধুরীর কফিনে ফুল দিয়ে  শ্রদ্ধা জানান। একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি, প্রকাশনা সংস্থা-পুথিনিলয়, নবান্ন প্রকাশনীসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সেখানে বুলবুল চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী আর নেই  

শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বে উপস্থিত ছিলেন শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম, শিশুসাহিত্যিক মালেক মাহমুদ, কথাসাহিত্যিক মাহবুব রেজা, কথাসাহিত্যিক জামাল রেজা, কথাসাহিত্যিক হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, কবি রুদ্র আরিফ, কবি অনন্ত উজ্জ্বল, কবি হানিফ খান, গবেষক কাজল ঘোষ, প্রকাশক ফরিদ আহমেদ, মাজহারুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন, আলমগীর সিকদার লোটন, শ্যামল পাল, হাবিবুর রহমান রুবেল, তপন মাহমুদ প্রমুখ।

বেলা ১২টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে  আরেক দফা জানাজা শেষে বেলা ২টার দিকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বুলবুল চৌধুরীকে দাফন করা হয় বলে তার ছেলে আর রাফি চৌধুরী জানান।

বুলবুল চৌধুরী ১৯৪৮ সালের ১৬ অগাস্ট গাজীপুরের দক্ষিণবাগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০২১ সালে সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।

লেখালেখির বাইরে পেশাগত জীবনে বুলবুল চৌধুরী সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কাজ করেছেন দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন দৈনিকে।

বর্ষীয়ান এই কথাসাহিত্যিকের উপন্যাসগুলোর তালিকায় আছে ‘অপরূপ বিল ঝিল নদী’, ‘কহকামিনী’, ‘তিয়াসের লেখন’, ‘অচিনে আঁচড়ি’, ‘মরম বাখানি’, ‘এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে’, ‘ইতু বৌদির ঘর’ ও ‘দখিনা বাও’।

তার আত্মজৈবনিক দু’টি গ্রন্থের নাম ‘জীবনের আঁকিবুঁকি’ ও ‘অতলের কথকতা’।

‘গাঁওগেরামের গল্পগাথা’, ‘নেজাম ডাকাতের পালা’, ‘ভালো ভূত’ আর ‘প্রাচীন গীতিকার গল্প’ নামক কিশোর গ্রন্থের রচয়িতাও তিনি।

সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, জসীমউদ্দীন স্মৃতি পুরস্কার, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ব্র্যাক ব্যাংক সমকাল সাহিত্য পুরস্কারও পেয়েছেন।