সাগরের অংশ ভরাট করে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 29 Aug 2021, 01:48 PM
প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ১০ হাজার ৭০০ ফুট দীর্ঘ এই রানওয়ের ১৩০০ ফুট থাকবে সমুদ্রের ভেতরে। তখন সেটাই হবে বাংলাদেশের দীর্ঘতম রানওয়ে।
রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “এই রানওয়েটা এমনভাবে সম্প্রসারণ করতে চাই, যাতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় প্লেনগুলো নামতে পারে, রিফুয়েলিং করতে পারে বা তারা আসতে পারে।”
কক্সবাজারকে একটি বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্নের কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “এটাকে আরো আধুনিক, সুন্দর পর্যটনকেন্দ্র আমরা করব। সেখানে সকলে এসে যেন আমাদের দেশটাকে উপভোগ করতে পারে। আর তাছাড়া এটা হলে আমরা আর্থিকভাবে অনেক সচ্ছল হবো। সেদিকেও আমাদের দেখতে হবে।”
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের পর কক্সবাজারকে বাংলাদেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করতে এই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার। এ বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হলে কক্সবাজারের পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিকাশে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে বলে সরকার আশা করছে।
রানওয়ে সম্প্রসারণের এ কাজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যার যোগান দিচ্ছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। নির্মাণ কাজে রয়েছে চীনা কোম্পানি চাংজিয়াং ইচাং ওয়াটার ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো (সিওয়াইডব্লিউসিবি) এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশনের জয়েন্ট ভেঞ্চার।
মহেশখালী চ্যানেলে ভূমি অধিগ্রহণ করে সেখানে ব্লক ও জিওটিউব ফেলে প্রথমে বাঁধ তৈরি করা হবে। তারপর সমুদ্র থেকে ড্রেজিং করে বালি এনে ফেলা হবে সেই বাঁধের ভেতরে। পরে উদ্ধার করা ওই ভূমিতে পাইলিংয়ের মাধ্যমে রানওয়ের ভিত্তি তৈরি হবে। এরপর পাথরের স্তর বসালে আকৃতি পাবে রানওয়ে।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, “একটা নতুন জিনিস আমরা করে দিচ্ছি, আমরা সাগরের মাঝে নিয়ে যাচ্ছি রানওয়ের কিছুটা। আমি ধন্যবাদ জানাই যারা এখানে সাহস করে কাজ করেছেন তাদেরকে।
“অনেকের অনেক দ্বিধা ছিল, অনেকের কথা ছিল। আর আমাদের পরিবেশবিদ কিছু আছে, যা পায় তার উপরই লাফ দিয়ে পড়ে। কোনো কিছু আগা মাথা বুঝে টুঝে না। তাদের হচ্ছে প্রতিবাদ করাটাই একটা বড় কথা।”
সব কিছু মোকাবেলা করেই রানওয়ে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি আমরা যে ওয়াদা জনগনের কাছে দিয়েছিলাম, এটা আরো একটা ধাপ আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
“দেশে প্রথমবারের মতো আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে জলভাগের উপরে রানওয়ে নির্মান করা হচ্ছে। এটাও দৃষ্টিনন্দন। আমি তো মনে করি আমাদের অনেকে এটাই দেখতে যাবে, যখন এই কাজটা শেষ হবে।”
নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সরকার প্রধান।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট থেকে বাড়িয়ে আগে ৯ হাজার ফুট করা হয়েছিল। তখনই প্রধানমন্ত্রী এ রানওয়ের আরও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
কাজ শেষ হলে এই রানওয়ে দৈর্ঘ্যে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১০ হাজার ৫০০ ফুট রানওয়েকে ছাড়িয়ে যাবে। রানওয়েতে যখন বিমান ওঠানামা করবে, তখনদুপাশে থাকবে বঙ্গোপসাগর।