সাম্প্রতিক ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় আলোচিত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার মুকুলের ‘অসদাচরণ ও দুর্নীতির’ বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত নিয়ে রিট আবেদনের বিষয়ে মঙ্গলবার আদেশ দেবে হাই কোর্ট।
Published : 09 Aug 2021, 04:02 PM
এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম রিট আবেদনটি করেছেন।
আবেদনের পক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী মো. আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া; রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আবেদনে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের ‘অসদাচরণ ও দুর্নীতির’ বিষয়ে তদন্ত করতে বিভাগীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিবাদীদের ব্যর্থতা এবং নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না প্রশ্নে রুল চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে কামরুন্নাহার মুকুলের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে।
এর আগে রিট আবেদনকারী ২৭ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও শিক্ষা সচিব বরাবরে চিঠি দেন।
সে চিঠিতে তিনি তদন্তের মাধ্যমে কামরুন্নাহার মুকুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে এবং তদন্তের স্বার্থে অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্তের দাবি জানান।
কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি উচ্চ আদালতে ররিট আবেদন করেন বলে জানান তার আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অধ্যক্ষ অডিওতে যেসব কথা বলেছেন, তাতে তিনি ওই কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন।
শিক্ষা সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচলক, অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার মুকুল এবং গভর্নিং বডির সভাপতিকে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।
ভিকারুননিসায় ভর্তি বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম তদন্তের মধ্যে এক অডিও ক্লিপ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনায় পড়েন অধ্যক্ষ মুকুল।
৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ওই অডিওতে নারী কণ্ঠে উত্তেজিত স্বরে পরিচালনা পর্ষদ ও অভিভাবক ফোরামের কাউকে উদ্দেশ করে অনবরত গালাগালি করতে শোনা যায়।
এক পর্যায়ে বলতে শোনা যায়, “আমি কিন্তু গুলি করা মানুষ। রিভলবার নিয়া ব্যাগের মধ্যে হাঁটা মানুষ। আমার পিস্তল বালিশের নিচে থাকত।”
তদন্ত কমিটি করলে ‘দা দিয়ে’ কোপানোর হুমকির কথাও শোনা যায় ওই কণ্ঠে। এক সময়ে ‘রাজনীতি’ করার কথা বলে বলা হয়, “আমার ছাত্রলীগ, যুবলীগ আছে, আমার যুব মহিলা লীগ আছে।”
কামরুন নাহারের দাবি, ‘এডিট’ করে ওই অডিও ক্লিপ তৈরি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এই ‘ষড়যন্ত্র’ করেছে প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরাম ও পরিচালনা পর্ষদ।
তবে ভিকারুননিসার শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, ওই ফোনালাপে তার সঙ্গেই অধ্যক্ষ কথা বলেছেন।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা কামরুন নাহার গত বছরের ডিসেম্বরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান।
তার আগে তিনি ঢাকার মিরপুরের দুয়ারীপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ছিলেন।
কামরুন নাহার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভিকারুননিসায় নানা অনিয়মের অভিযোগ আসায় তা তদন্তে সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।