করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লকডাউনে শুক্রবার ছুটির দিনে রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ আগের কয়েক দিনের তুলনায় কম থাকলেও বাজারে বেড়েছে কেনাকাটার ভিড়।
Published : 06 Aug 2021, 01:21 PM
লকডাউনের পঞ্চদশ দিনে ঢাকার প্রধান সড়কে প্রাইভট কারসহ পন্যবাহী কভার্ড ভ্যান কম দেখা গেছে। তবে অলিগলিতে প্রচুর রিকশা চলায় ভিড় রয়েছে বেশ।
মালিবাগ, রামপুরা, মগবাজার, কাওরান বাজার, ফার্মগেইট, ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর, সাত মসজিদ রোড, হাজারীবাগ ঘুরে এরকম দৃশ্যই দেখা গেছে শুক্রবার সকালে।
মালিবাগে রফিক নামের এক রিকশা চালক বললেন, “গত কয়দিন গাড়ি-ঘোড়ার ঠেলায় আমরা কষ্টে ছিলাম। আইজ্জা একটু ভালো আছি। রাস্তায় হেইভাবে যানজট নাই। আইজ্জা লকডাউন লকডাউন মনে হইতাছে।”
মালিবাগ থেকে রিকশা মগবাজারে বাসায় যাচ্ছিলেন সুমাইয়া আহমেদ। তিনি বললেন, “গত দুইদিন যেভাবে রাস্তায় প্রাইভেট কারের মিছিল দেখেছি, আজকে সেটা নেই। আজকে একটু হালকা লাগছে। ভিড়-ভাট্টা কিছুটা কম।”
তবে লকডাউন যেভাবে হচ্ছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে সুমাইয়া বলেন, “অফিস-টফিস, কলকারখানা খুলে দিয়ে বলা হচ্ছে লকডাউনে বাসায় থাকুন। এটা কেমন লকডাউন আমি বুঝি না। আমার কাছে মনে হচ্ছে, কোথাও গলদ আছে। সংক্রমণ রোধ করতে হলে অবশ্যই কঠোর লকডাউন এবং মানুষের জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একটা করবেন, আরেকটা করবেন না এটা হয় না।”
লকডাউনের প্রথম দিকে অলি-গলিতে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি হত প্রচুর। এখন বাজারে ভিড় বাড়ায় ভ্যানের বিক্রি কমে গেছে বলে জানালেন সুলায়মান নামের এক বিক্রেতা।
“আগে করোনার ভয়ে অনেক সাহেব-বিবি সাহেবরা কাঁচাবাজারে যাইতেন না। এখন ওই ভয় কইমা গেছে। আমাগো কপাল পুড়ছে। এখন বিক্রি কম।”
শান্তিনগর বাজারে সবজি কিনতে আসা বেইলি রোডের বাসিন্দা ফরিদা আখতার বললেন, “ভ্যানের তরিতরকারি অনেক সময় তাজা থাকে না। আজকে তাজা সবজি কিনতে বাজারেই এলাম। তবে কাঁচাবাজারে মানুষের যে ভিড় দেখছি, কিছুটা ভয়ের মধ্যেই আছি।”
লকডাউনে রাজধানীর সড়কে রিকশা, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ির পরিচয়ে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকার চলাচল করছে, ভাড়া নিয়েও চলছে নৈরাজ্য।
ফার্মগেইটের মোড়ে দেখা গেলো পুলিশ সদস্যরা দুটি অটোরিকশা থামিয়ে কাগজপত্র দেখছেন। ওই দুই অটেরিকশাতেই যাত্রী ছিল।
ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর, সাত মসজিদ রোড এলাকায় রিকশা চলাচল অন্য এলাকার চেয়ে বেশি দেখা গেছে। তবে ছুটির দিন ব্যক্তিগত গাড়ি বেরিয়েছে কম।
স্থানীয় দোকানদার কাউসার বললেন, “লকডাউন তো আরো পাঁচ দিন বাড়িয়েছে, এজন্য লোকজনের আনাগোনা কম। তবে অলিগলিতে দোকানপাট খোলা রয়েছে।”
লালবাগ ও হাজারীবাগ এলাকায় মানুষের চলাচল দেখা গেল অন্যান্য দিনের মতই। হাজারীবাগ কাঁচাবাজারে সকাল থেকেই ক্রেতাদের আনাগোনা ছিল বেশ।
আশিকুর রহমান নামে এক ক্রেতা বললেন, “শুক্রবার ছাড়া অন্য দিনে সময় পাওয়া যায় না, তাই বাজার করতে আসা।”
লালবাগ নবাবগঞ্জ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী খালেক মিয়া বললেন, “গত শুক্রবারের চেয়ে আজ বাজারে ড়িড় বেশি, দোকানে কেনাকাটায় চাপও বেশি।”