নির্জন সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে ওয়াকিটকি, অস্ত্র আর হ্যান্ডকাফ নিয়ে ডিবি পুলিশের জ্যাকেট গায়ে ছিনতাই এবং ডাকাতির সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
Published : 14 Jul 2021, 03:53 PM
গ্রেপ্তাররা হলেন- জাহিদ হাসান রেজাউল, মানিক বেপারি ওরফে দারোগা মানিক, ফারুক হোসেন ওরফে নাসির উদ্দিন ও রুবেল সিকদার রুস্তম।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকা থেকে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ।
বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) হারুন অর রশীদ বলেন, “গ্রেপ্তার চারজন ডিবির ভুয়া পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করে বেড়াত।
“ঈদকে টার্গেট করে বড় বড় পাইকারদের পিছু নিত তারা। এরপর সুবিধাজনক নির্জনস্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে থাকা সব লুট করে নিত।”
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সংঘবদ্ধ আন্তঃনগর ডাকাত দলের সদস্য দাবি করে তিনি বলেন, “তারা ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশুর হাটে আসা ব্যাপারী ও ক্রেতাদের ডাকাতি করার পরিকল্পনা করছিল।
“গ্রেপ্তাররা তাদের অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ডিবি পুলিশের ছদ্মবেশ ধারণ করে রাতে রাজধানী ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলার সড়কে স্বল্প সময়ের জন্য পুলিশের চেকপোষ্ট বসিয়ে ডাকাতি করে।”
তিনি জানান, বিভিন্ন ব্যাংকের আশেপাশে ওঁৎ পেতে কেউ বড় অঙ্কের টাকা ওঠাচ্ছে কিনা তারা নজরে রাখত। পরে ওই ব্যক্তিকে অনুসরণ করে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গাড়িতে তুলে ডাকাতি করে হাত পা বেঁধে কোনো জায়গায় ফেলে দিত।
“আবার গার্মেন্টেসে বেতন দেওয়ার সময় গাড়িতে করে টাকা আনা নেওয়া হয়। এটাই তারা সোর্সের মাধ্যমে নজরদারি করে ডাকাতির চেষ্টা করে।”
ডিবি পুলিশের জ্যাকেট গায়ে কিংবা অন্যান্য সরঞ্জাম দেখিয়ে সবকিছু দাবি করলে না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, “ডিবি পুলিশ সব সময় বা সব জায়গায় টেকপোস্ট বসায় না।
“সুতরাং পুলিশ পরিচয়ে কেউ সবকিছু নিতে চাইলে ভেরিফাই করুন, আশপাশে পোশাকে অন ডিউটিতে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হোন।”
গ্রেপ্তার চারজনের নামে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে এবং তারা সবাই বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছে বলেও জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি এবং অস্ত্র আইনে আলাদা ২ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, “ঈদকে কেন্দ্র করে গরুর পাইকার, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কিংবা কেউ যদি মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেন তাহলে পুলিশকে জানান, পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে মানিস্কট সেবা নিন।
“মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনে অলি গলিপথ এড়িয়ে চলুন, যেখানে সিসি ক্যামেরা আছে, সেখানে বসে লেনদেন করুন।”
গরু বহন করা গাড়ি, পশুর হাটের পাইকার ও ক্রেতার টাকা যেন কেউ ছিনতাই করতে না পারে সেজন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশসহ পুলিশের অন্যান্য ইউনিট সক্রিয় রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় ডিবি।