করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবেলায় এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিন গুণ আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকার।
Published : 22 May 2021, 06:18 PM
সেই সঙ্গে মৃত্যু শূন্যের কোটায় রাখতে শতভাগ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার চেষ্টাও থাকছে বলে জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।
বঙ্গোপসাগরে শনিবার একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই খবরে শনিবার বিকালে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির ‘পলিসি কমিটির সভা’র বৈঠক ডাকা হয়।
সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “উপকূলীয় এলাকায় শতভাগ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে হবে। যে করেই হোক সবাইকে শেল্টারে আনতে হবে, একজনকেও রেখে আসা যাবে না। এবার আমরা টার্গেট রাখব, মৃত্যুহার যেন জিরো হয়।”
সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘ইয়াস’। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে বুধবার বাংলাদেশ-ভারত উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত বছর মে মাসে বাংলাদেশে যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল, তার নাম ছিল ‘আম্পান’।
সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারের প্রস্তুতি তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তার আগে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময়ে পাঁচ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহার করা হয়েছিল। আম্পানের সময়ে ১৪ হাজার ৬৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২৪ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষকে রাখা হয়।
“কোভিডের কারণে তিন গুণ আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহার করব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবহার করা হবে। সবার জন্য মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হবে।”
আশ্রয়কেন্দ্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সতর্ক থাকার জন্যে মাঠ পযায়ে নির্দেশনাও দেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “কোভিড রোগী থাকলে তাকে আইসোলেশনে রাখতে হবে। আক্রান্ত কেউ যেন সুস্থ মানুষের মাঝে না আসতে পারে, সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোনোভাবেই যেন আশ্রয় কেন্দ্র থেকে নতুন করে সংক্রমণের সৃষ্টি না হয়।”
সভার শুরুতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ লঘুচাপটির সর্বশেষ অবস্থা বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, এটি এখনও হাজার কিলোমিটার দূরে রয়েছে। তাই সমুদ্রবন্দরে এক নম্বর দূরবর্তী সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। নিম্নচাপ হওয়ার পর ধীরে ধীরে উপকূলের দিকে এলে সঙ্কেত বাড়ানো হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান ২৩ মে’র পরে ঠিকভাবে বোঝা যাবে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী এনামুর বলেন, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) সব সদস্যদের এরমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। তারা প্রচার শুরু করেছে। শেল্টার সেন্টারগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছে। কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে প্রচার করছে।
তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত রয়েছে। স্কাউটের ছয় লাখ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। শুকনা খাবার মজুত রয়েছে। রোববার থেকে বিভিন্ন জেলায় এসব খাবার পাঠিয়ে দেওয়া হবে।