দশ বছর আগে ঢাকার তুরাগের রানাভোলা এলাকায় গৃহবধূ জেসমিন আক্তারকে হত্যার মামলায় তার স্বামী মো. শহিদুল ইসলামকে খালাস দিয়েছে আদালত।
Published : 07 Jan 2021, 01:20 PM
শহিদুলের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার হোগলপাতি গ্রামে। আর জেসমিনের বাবার বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ির বুজরুক বরকাতপুরে। তুরাগের রানাভোলা এলাকার এক বাড়িতে তারা ভাড়া থাকতেন।
২০১১ সালের ২২ অগাস্ট রাতে ওই বাড়ি থেকে জেসমিনের লাশ উদ্ধারের পর তার ছোট ভাই মো. আব্দুর রশিদ তুরাগ থানায় শহিদুলকে আসামি করে এই হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সেখানে অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক বিরোধের জেরে জেসমিনকে ‘শ্বাসরোধে হত্যা’ করেন শহিদুল। জেসমিনের চার বছরের মেয়ে ওই ঘটনা দেখে ফেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০১১ সালে ২৬ ডিসেম্বর শহিদুলকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করে শহিদুলের বিচার শুরু করে আদালত।
জেসমিনের মেয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম সাবরিনা আলীর কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বলে “আমার আব্বু রাতের বেলায় আমার আম্মুকে গলা টিপে মেরে ফেলে। তারপর আম্মুকে খাটে মশারির নিচে শোয়ায়ে দিয়ে ঘরের ফ্যান চালিয়ে লাইট জ্বালিয়ে ঘরের বাইরে তালা দিয়ে আমাকে নিয়ে চলে যায়।”
রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন।
রায়ের বিবরণে বলা হয়, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক তার প্রতিবেদন এবং আদালতে দেওয়া সাক্ষে বলেছেন, জেসমিনের মৃত্যুর কারণ ‘হত্যা নয় বরং আত্মহত্যা প্রকৃতির’।
আর জেসমিনের মেয়ে হাকিমের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তার মাকে ‘গলা টিপে মেরে ফেলার’ কথা বললেও আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে তা বলেনি। বরং বলেছে, “আমার আব্বু কাজে বাইরে ছিল। আমার আব্বু আর আসে নাই। আমি আর কিছু জানি না।”
মামলার বিচারের সময় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক এবং জেসমিনের শিশুকন্যাকে ‘বৈরী সাক্ষী’ ঘোষণা করে জেরা করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। আর আসামি নিজেও হাকিমের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।
বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, এ ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ আনা যেতে পারত।
এ ট্রাইবুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আবদুল্লাহ ভূঞা রায়ের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাদী রায়ের সময় এজলাসে ছিলেন না। তার মত জানি না। আর দ্রুত বিচারের মামলায় আপিল করতে গেলে জেলা ম্যাজিস্টেটের অনুমতি লাগবে।”