কাউন্সিলর পদ হারালেন হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান

সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনার জেরে ভ্রাম্যমাণ আদালত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর কাউন্সিলর পদ হারালেন সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ ইরফান সেলিম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2020, 01:21 PM
Updated : 27 Oct 2020, 07:56 PM

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর‌পে‌রেশ‌নের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফানকে সাময়িক বরখাস্ত করে মঙ্গলবার রা‌তে আদেশ জারি করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

দণ্ডিত হওয়ায় আইন অনুযায়ী এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সরকার (সিটি কর‌পো‌রেশন) আইনে বলা হয়েছে, কো‌নো জনপ্রতি‌নি‌ধি সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনি বরখাস্ত হবেন।

নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে মারধরের পর সোমবার হাজী সে‌লি‌মের বাড়ি তল্লাশি ক‌রে মদ ও ওয়াকিটকি পাওয়ায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইরফানকে এক বছর কারাদণ্ড দেয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ মঙ্গলবার সকালে বি‌ডি‌নিউজ টোয়েন্টি‌ফোর ডটকম‌কে বলেছিলেন, “দক্ষিণ সিটি কর‌পো‌রেশন থেকে তার দ‌ণ্ডিত হওয়ার বিষ‌য়ে রিপোর্ট পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব, তা‌কে সাময়িক বরখাস্ত করা হ‌বে।”

এরপর স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “অভিযোগটি আমাদের নথিভুক্ত হয়েছে, আমরা প্রসেস করছি। সম্ভবত আইন অনুযায়ী তাকে আজকেই (মঙ্গলবার) সাময়িকভাবে বরখাস্ত করব।”

পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর ইরফানকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।

আদেশে বলা হ‌য়ে‌ছে, “যে‌হেতু তার বিরু‌দ্ধে নৌবা‌হিনীর একজন কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর উপর হামলার অভি‌যো‌গে ফৌজদারি মামলা হ‌য়ে‌ছে, ‌তি‌নি বি‌দে‌শি মদ সেবন করার দা‌য়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক এক বছর কারাদণ্ডে দ‌ণ্ডিত হ‌য়ে‌ছেন এবং ৫০ হাজার টাকা জ‌রিমানা অনাদা‌য়ে আরও এক মাস দ‌ণ্ডিত হ‌য়ে কারাগা‌রে আছেন, অবৈধ ওয়া‌কিট‌কি রাখা ও ব্যবহা‌রের দা‌য়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক ছয় মাস কারাদ‌ণ্ডে দ‌ণ্ডিত হ‌য়ে‌ছেন, তার বিরু‌দ্ধে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার দা‌য়ে আরও মামলা দা‌য়েরের কার্যক্রম চলমান র‌য়ে‌ছে।

“তার উক্ত কর্মকাণ্ড স্থানীয় সরকার (সি‌টি কর‌পো‌রেশন) আইন অনুযায়ী নৈ‌তিক স্খলনজনিত অপরাধ এবং অসদাচর‌ণের শা‌মিল হওয়ায় তা‌কে ওয়ার্ড কাউন্সি‌লরের পদ থে‌কে সাম‌য়িকভা‌বে বরখাস্ত করা হল।”

গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হন ইরফান।

হাজী সেলিম ওই এলাকায়ই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। তিনিও একবার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে এমপি হয়েছিলেন।

ইরফানের শ্বশুর একরামুল করিম চৌধুরীও নোয়াখালী সদর আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য।

ইরফান বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মদিনা গ্রুপের পরিচালকদের একজন।