সৌদি আরবে ফেরার টিকেট না পেয়ে বিক্ষুব্ধ প্রবাসীরা বুধবারও বিক্ষোভ করেছেন; কারওয়ান বাজারে সড়ক অবরোধ করার পর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবন ঘেরাও করে তারা তুলে ধরেছেন নিজেদের দাবি।
Published : 23 Sep 2020, 03:00 PM
তারা বলছেন, এ মাসের মধ্যে সৌদি আরব যেতে না পারলে অনেকেই চাকরি হারাবেন। সে কারণে তাদের দ্রুত ফেরার ব্যবস্থা করা জরুরি। ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সেখানে যাওয়ার টিকেটও লাগবে তাদের।
কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সৌদি আরবের অনুমতি না মেলায় এখনও সেদেশে ফ্লাইট পুনরায় চালু করতে পারেনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সও টিকেট দিতে পারছে না।
এদিকে টিকেট না পেয়ে গত কয়েক দিন ধরেই মতিঝিলে বিমান অফিসের সামনে এবং কারওয়ান বাজারে সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সের অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে আসছেন সৌদি ফিরতে আগ্রহীরা।
এর ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল ৯টার দিকে কয়েকশ প্রবাসী কারওয়ান বাজারে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে সড়কে অবস্থান নিলে কিছু সময়ের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
এরপর বেলা ১১টার দিকে তারা ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের আরেকটি দল বেলা ১২টার দিকে মতিঝিল থেকে মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।
রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, “প্রবাসী কল্যাণ ভবনের সামনে তারা অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করেছেন, কোনো ধরনের গণ্ডগোল হয়নি।”
আর শাহবাগ থানার পরিদর্শক (পেট্রোল) আবুল বাশার বলেন, “প্রবাসীদের ওই দলটি মিছিল করে এসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। পরে তাদের তিনজন মন্ত্রণালয় প্রবেশ করে সচিবের সঙ্গে কথা বলে ফিরে গেছেন।”
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের অনেকেই মার্চে মহামারীর শুরুতে দেশে আসার পর আ ফিরতে পারেননি। এখন ফেরার জন্য তারা ফ্লাইট পাচ্ছেন না।
কারও কারও হাতে রিটার্ন টিকেট থাকলেও বেশি টাকা চাওয়া হচ্ছে। এ মাসের মধ্যে ফিরতে না পারলে চাকরি চলে যাওয়ার শঙ্কায় আছেন তারা।
মহামারীতে দীর্ঘদিন আকাশপথ বন্ধ রাখার পর সৌদি আরব সরকার ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর অনুমতি দেয়। সে অনুযায়ী সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স এয়ারলাইনস সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট চালানোর অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু এ মাসের সব টিকেট ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে যাওয়ায় আর কেউ টিকেট পাচ্ছেন না।
আবার প্রবাসীদের যাদের হাতে রিটার্ন টিকেট আছে, তার বেশিরভাগই বিমানের। কিন্তু বিমান এখনও সৌদি আরবে নামার অনুমতি পায়নি।
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সৌদি প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে, যাতে তারা সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এর সুরাহা করে।
অন্যদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্সকে এই শর্তে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল যে বাংলাদেশি এয়ারলাইন্সও সে দেশে যেতে পারবে। কিন্তু বিমানকে এখনও অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
বিমান যেন সৌদিতে ফ্লাইট চালাতে পারে, সেজন্য ‘সর্বোত চেষ্টা’ চালাচ্ছেন বলে জানান মফিদুল।
“আমাদের দেশি কিছু এজেন্সি টিকেট ব্লক করে ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা আমাদের প্রবাসীদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করব।”
আরও পড়ুন