করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে এবছর রাস্তায় তাজিয়া মিছিলের অনুমতি ছিল না, কিন্তু পুরান ঢাকার হোসেনী দালান প্রাঙ্গণে কারবালার রক্তাক্ত স্মৃতির স্মরণে নেমেছিল মানুষের ঢল।
Published : 30 Aug 2020, 05:21 PM
রোববার আশুরার দিন সকাল থেকেই শোকের আবহে ভক্তদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে হোসেনী দালান চত্বর। তাদের হাতে ছিল লাল-কালো আর সবুজের সমারোহে নানা অক্ষর খোচিত নিশান।
ইমামবাড়া প্রাঙ্গণে খালি পায়ে মিছিল করে বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন! হায় হোসেন!’ বলে আশুরার মাতম ও মর্সিয়ায় মিলেছেন তারা।
১০-২০ জনের ছোট ছোট দল করে ভক্তরা চক্রাকারে ঘুরে ঘুরে কারবালার ঘটনাপ্রবাহরের স্মৃতি তুলে ধরে ধরেছেন শোকগীতিতে। ইমামবাড়ার ভেতরে সুসজ্জিত সমাধিগুলোতে প্রার্থনা করতে দেখা গেছে অনেককে।
হিজরি ৬১তম বর্ষের (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) ১০ মহররম ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে মুসলমানদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) শহীদ হন।
বিশ্বের অনেক দেশের মত বাংলাদেশেও শিয়া মুসলমানরা ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে দিনটিকে পালন করেন ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্য দিয়ে।
এই দিনে প্রতিবছর ইমামবাড়া থেকে বের হত আশুরার প্রধান তাজিয়া মিছিল। রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ধানমণ্ডিতে প্রতীকী ‘কারবালা’ প্রাঙ্গণে তা শেষ হত।
কিন্তু এ বছর মহামারীর কারণে গণজমায়েত নিষিদ্ধ থাকায় খোলা স্থানে তাজিয়া মিছিল ও সমাবেশ না করে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরোয়াভাবে আশুরার আনুষ্ঠানিকতা সারতে বলেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ।
ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেনের দুটি প্রতীকী ঘোড়ায় শ্রদ্ধাভরে চুম্বন, দুধ ও ছানা দিয়ে ঘোড়ার পা ধুয়ে মুখ, কপাল আর মাথায় লাগাতে অনেক মানুষকে রীতিমত ধাক্কাধাক্কি করতে দেখা যায়।
সকালে অল্প সময়ের মধ্যেই ইমামবাড়া প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। তাদের মধ্যে নারী, পুরুষ, এমনকি শিশুরাও ছিল। কথা বলে জানা যায়, অনেকে বিভিন্ন মানত ও নিয়ত করে এখানে এসেছেন। করোনাভাইরানের বিপদ কাটার জন্যও বিশেষ প্রার্থনা করেছেন বলে জানালেন কেউ কেউ।
ইমামবাড়ার তত্ত্বাবধায়ক এমএম ফিরোজ হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী মহামারী চলছে। এর প্রভার যেমন বাংলাদেশে পড়েছে, তেমনি আশুরাতেও পড়েছে। সরকারে নির্দেশনার প্রতি সম্মান রেখে এ বছর তাজিয়া মিছিল না করে সীমিত পরিসরে শোক পালন করছি।