রিজেন্ট হাসপাতালে চেয়ারম্যান সাহেদ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এখন ডিবির হেফাজতে রয়েছেন। হেফাজতে রয়েছেন ডা. সাবরিনাও, যিনি জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়ার কথা আগেই জানিয়েছে ডিবি।
সাবরিনা ও সাহেদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল বলে খবর চাউর হওয়ার মধ্যে রোববার গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাদের কি মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কি না?
জবাবে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শনিবার সাবরিনা ও সাহেদকে কিছুক্ষণের জন্য মুখোমুখি করা হয়েছিল। দুজন দুজনকে চেনে কি না, তা বোঝার জন্য।
“দুজন দুজনকে চেনেন না বলে জানিয়েছে। তবে আমাদের কাছে (গোয়েন্দা) তথ্য রয়েছে, দুজন দুজনকে চেনেন।”
আরিফুল ও সাবরিনার অপরাধের প্রমাণ পেয়েছেন জানিয়ে এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, “খুব তাড়াতাড়ি (মামলার) চার্জশিট দেওয়া হবে।”
করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, সরকারের কাছে বিল দেওয়ার পর আবার রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেওয়াসহ রিজেন্ট হাসপাতালে নানা অনিয়মের খবর সম্প্রতি প্রকাশ্য হয় র্যাবের অভিযানের মধ্য দিয়ে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে আসা এবং টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠানে মুখ দেখানো রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদকে ১৫ জুলাই র্যাব গ্রেপ্তার করে।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সাবরিনাকে গত ১২ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। তিনিও টেলিভিশনে মুখ দেখাতেন স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে।
সাবরিনার স্বামী আরিফুল চৌধুরী ছিলেন ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার- সংক্ষেপে জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করিয়ে অর্থের বিনিময়ে ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগে আরিফুলকে গ্রেপ্তারের পর তার স্ত্রী সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাদের দুজনকে হেফাজতে এনে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আরিফুলকে রোববারই কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জেকেজির দুর্নীতির ঘটনায় দুজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুজনকে কয়েকবার মুখোমুখি করা হয়েছে এবং অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। অস্বীকার করার উপায়ও ছিল না। তাদের কম্পিউটারে হাজার হাজার ভুয়া রশিদ আর বেতন নেওয়ার স্লিপ কোথায় যাবে।”
তবে সাবরিনা ও আরিফুল একে অন্যের উপর দোষ চাপাচ্ছেন বলে জানান এই ডিবি কর্মকর্তা।
ডিবির উপ-কমিশনার (তেজগাঁও বিভাগ) গোলাম মোস্তফা রাসেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে সাবরিনাকে।
আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন দেখছেন না- প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে অপরাধের সত্যতা পাওয়া গেছে। যা পেয়েছি, গুছিয়ে নিই।”
আরিফুলকে আর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে না নেওয়ার বিষয়েও রাসেল বলেন, “যা তথ্য পেয়েছি, সেগুলো গুছিয়ে নিই। তারপর যদি আরও তথ্যের প্রয়োজন হয়, তখন আবার রিমান্ডে চাইব।”