করোনাভাইরাসে সাহেদের বাবার মৃত্যু

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে প্রতারণা করা রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ সাহেদের বাবা সিরাজুল করিম এই রোগে মারা গেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2020, 07:59 PM
Updated : 9 July 2020, 07:59 PM

ঢাকার মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান।

ইউনিভার্সেল মেডিকেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত ৪ জুলাই সিরাজুল করিমকে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেন সাহেদ। সিরাজুল করিমের বয়স ছিল প্রায় ৭০ বছর।

ভর্তি করার সময় সাহেদ তাদের জানিয়েছিলেন, তার বাবার কোভিড-১৯ সংক্রমণ নেই।

করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়া রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ

“আমাদের বলা হয়েছিল, এর আগে তিনটি পরীক্ষায় সিরাজুল করিমের কোভিড-১৯ নেগেটিভ আসে। কিন্তু তার লক্ষণ দেখেই মনে হয়েছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত। আমাদের এখানে পরীক্ষায় তার কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে।”

ভর্তির দুই দিন পর সিরাজুল করিমকে আইসিইউতে নেওয়া হয় জানিয়ে ডা. আশীষ বলেন, “তার ফুসফুসে সংক্রমণ ছিল। অবস্থা খারাপ হলে দুই দিন আগে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা যান তিনি।”

আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানান, ভর্তির পর প্রথম দুই দিন সাহেদ তার বাবাকে দেখতে এসেছিলেন। তবে ৬ জুলাইয়ের পর থেকে এখানে তাদের আর কেউ আসছিলেন না।

“উনার মৃত্যুর পর সাহেদের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সাহেদের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। সাহেদের স্ত্রীকে আমরা ঘটনাটি জানাই। তিনি তার একজন প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছেন। রাতে সিরাজুল করিমের মরদেহ তার প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বেসরকারি হাসপাতাল হিসেবে এই রোগের চিকিৎসায় এগিয়ে আসা রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ। ওই হাসপাতালে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার প্রমাণ পেয়ে গত ৬ জুলাই অভিযান চালায় র‌্যাব।

ওই অভিযানে রিজেন্ট হাসপাতালে অনিয়মের নানা ঘটনা ধরা পড়ার পরদিন উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতালের প্রধান কার্যালয়ে ফের অভিযানে যায় র‌্যাব। দুই দিনের অভিযানে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা চেয়ারম্যান সাহেদের নির্দেশে পরীক্ষা ছাড়াই করোনাভাইরাসের ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এরপর রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি র‌্যাবের পক্ষ থেকে সাহেদসহ মোট ১৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। দুই দিনের অভিযানে গ্রেপ্তার আটজনও এই মামলায় আসামি।

এখন সাহেদসহ বাকি নয় আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে আইনশঙ্খলা বাহিনী।