দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বৃহস্পতিবার সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কঠিন সময় মোকাবেলা করছে, “আমরা আম্পান মোকাবেলা করলাম, এরপরেই ২৬ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদী বন্যা মোকাবেলা করছি। ৭ জুলাই থেকে ১২টি জেলায় বন্যা অনেকটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চলে এসেছে।”
প্রতিমন্ত্রী জানান, ১০/১১ জুলাই থেকে আবারও পানি বাড়বে। ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা ও মেঘনা নদীর পানি বাড়ায় ২০ থেকে ২৪টি জেলা প্লাবিত হবে। এবার বন্যার স্থায়িত্ব দীর্ঘায়িত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
নতুন করে বন্যার পূর্বাভাস পেয়ে বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করার কথা জানিয়ে এনামুর বলেন, যেহেতু বন্যায় এবার বেশি এলাকা প্লাবিত হবে, তাই মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার বিষয়ে তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
“সেজন্য আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, ডিসিরা যেন বেশি বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেন। কারণ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চলছে, এই পরিস্থিতিতে যাতে সামজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায়… আশ্রয়কেন্দ্রে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছি।”
এই ২৩টি জেলায় পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সব জেলায় ২০০ মেট্রিকটন করে চাল, দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার এবং শিশু খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা, গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা এবং নগদ তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, পানি বাড়লেও মাঠ প্রশাসন যেন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারে, সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
“বন্যাকবলিত এলাকার জনগণকে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা আতঙ্কিত হবেন না, প্রধানমন্ত্রী আপনাদের পাশে আছেন, তিনি সব সময় আপনাদের খবর রাখেন এবং আমাদের নির্দেশ দেন। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। কাজেই কোনো অবস্থাতেই খাবারের কোনো সঙ্কট হবে না।”
বন্যা, নদীভাঙ্গন, পাহাড়ী ঢল, অতিবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা দিতে গত ৬ জুলাই সারা দেশে ১০ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন চাল এবং এক কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
এছাড়া বন্যা দুর্গত ১২ জেলায় ২৪ হাজার প্যাকেট/বস্তা শুকনা ও অন্যান্য খাবার, শিশু খাদ্য কিনতে ২৪ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্য কিনতে আরও ২৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।