নতুন করোনাভাইরাস মহামারীজনিত সঙ্কট কেটে গেলে আপিল বিভাগে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পুনর্মূল্যায়নের আবেদনের শুনানি শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
Published : 30 Jun 2020, 03:59 PM
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দেওয়ার সময় মন্ত্রী একথা বলেন।
এর আগে জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্ন ছাঁটাই প্রস্তাব ওঠানোর সময় ষোড়শ সংশোধনীর সর্বশেষ অবস্থা জানতে চান।
আইনমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই সংসদে আমরা সংবিধান সংশোধন করেছিলাম, ষোড়শ সংশোধনী। সেই সংশোধনীটা বাতিল করা হয়েছিল। তারপর আমরা তা আপিল করেছিলাম কি না? আপিল করলে তার কী অবস্থা? আমরা জানি না।
“আইনমন্ত্রীকে বলবো এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিন। আপনার প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে। আপনার যোগ্যতার প্রতি আমাদের আস্থা আছে।”
পরে আনিসুল হক বলেন, “ষোড়শ সংশোধনীর বিষয়ে একজন সংসদ সদস্য কথা বলেছেন। ষোড়শ সংশোধনীর বিষয় রিভিউ পিটিশন হিসেবে আপিল বিভাগে আছে। যখনই করোনাভাইরাস আমাদেরকে ছেড়ে যাবে তখনই শুনানি শুরু করব।”
বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতেই ছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত করা হয়।
পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় গিয়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী এনে বিচারক অপসারণের বিষয় নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করেন।
পঞ্চম সংশোধনী আদালত অবৈধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনলেও তখন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
সেই পরিবর্তন আসে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে। তাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা ফিরে পায় সংসদ।
ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন ৯ আইনজীবী। শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে হাই কোর্টের তিন বিচারকের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ১ অগাস্ট। ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ পিটিশন করে।