মুগদা হাসপাতালের পরিচালক ওএসডি

ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক শহিদ মো. সাদিকুল ইসলামকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে, যে হাসপাতাল কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে দেওয়া মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2020, 05:18 AM
Updated : 30 April 2020, 08:18 AM

সাদিকুল ইসলামের চাকরির মেয়াদ আছে আর সাত মাস। বৃহস্পতিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গতকাল ওএসডির চিঠি পেয়েছি। এখন আপাতত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগদান করতে হবে।”

তাকে ওএসডি করার কারণ জানতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান খানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

এদিকে গত ২৬ এপ্রিল আরেক আদেশে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহ গোলাম নবীকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পিপিই নীতিমালা অনুযায়ী রোগীর নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য এন-৯৫ মাস্ক পরা জরুরি। কিন্তু মার্চের শেষ ভাগে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব মাস্ক পাঠানো হয়, তার প্যাকেটে ‘এন-৯৫’ লেখা থাকলেও ভেতরে ছিল সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক।

ফলে সেগুলো আসল মাস্ক কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা; বিষয়টি সে সময় সংবাদ মাধ্যমেও আসে।

মুগদা জেনারেল হাসপাতালে সরবরাহ করা মাস্কের প্যাকেটে সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক থাকায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী ওই মাস্কের মান সম্পর্কে জানতে চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে পরিচালককে চিঠি দেন।

বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহ ২ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে স্বীকার করেন, ওই মাস্ক সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক ছিল। প্যাকেটের গায়ে জন্য এন-৯৫ লেখা হয়েছিল ‘ভুল করে’।

বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলে গত ২০ এপ্রিল এক ভিডিও কনফারেন্সে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী সেদিন বলেন, “হাসপাতালে কিছু জিনিস গেছে, পিপিইর নাম দিচ্ছে বেশ ভালো, কিন্তু জিনিসগুলো বোধহয় ঠিকমত যায়নি। এটা একটু আপনাদের খোঁজ করে দেখা উচিৎ।”

পরে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক ব্যাখ্যা দিতে গেলে তাকে থামিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “এন-৯৫ লেখা আপনাদের বক্সে। কিন্তু ভিতরের যে জিনিসটা, সেটা সঠিক থাকে কিনা, এটা একটু আপনাদের দেখা দরকার।

“আপনারা দিয়ে দিচ্ছেন, বলে দিচ্ছেন। কিন্তু যারা সাপ্লায়ার, তারা ঠিক মতো এটা দিচ্ছে কিনা বা সঠিক জিনিসটা কিনছে কিনা, এটা দেখা দরকার। এটা দেখবেন। যেহেতু আমি … বেশি কিছু করতে চাই না, আমি মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি ছবিটা, ওটা যাচাই করে দেখার জন্য। এটা একটু নজর দিয়েন।”

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ২৪ এপ্রিল প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। তবে প্রতিবেদন দিতে পাঁচ কর্মদিবস চেয়ে নেয় কমিটি।

তিন সদস্যের ওই তদন্ত কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. সাঈদুর রহমান বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা গত পরশু রিপোর্ট যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি।”

তবে প্রতিবেদনে কী আছে সে বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি তিনি।

আরও পড়ুন