এলাকাবাসীর আপত্তি সত্ত্বেও ঢাকায় নভেল করোনাভাইরাসে মৃত একজনকে খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরাস্থানে দাফন করা হয়েছে।
Published : 25 Mar 2020, 06:59 PM
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় মারা যাওয়া সর্বশেষ ব্যক্তিকে বুধবার ওই কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “একটু আগেই দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এলাকাবাসীকে বুঝিয়ে আমরা দাফনের ব্যবস্থা করেছি।”
এ নিয়ে বাংলাদেশে কভিড-১৯ এ মৃত পাঁচজনের মধ্যে চারজনের দাফন হয়েছে। প্রথম মৃতকে আজিমপুরে কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এরপর আরও দুইজনকে তালতলায় দাফন করতে গেলে এলাকাবাসীর বাধায় সম্ভব হয়নি। পরে তাদেরকে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বাকি অন্যজনকে কোথায় দাফন করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীতে কেউ মারা গেলে খিলগাঁও-তালতলা কবরস্থানে দাফনের সিদ্ধান্ত গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
কিন্তু এলাকাবাসীর বাধার প্রেক্ষাপটে বুধবার দুই সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য সচিব ও স্থানীয় সরকার সচিবের বৈঠকে আগের সিদ্ধান্তেই থাকার কথা জানান উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোমিনুর রহমান মামুন।
সর্বশেষ মৃত ব্যক্তিকে তালতলায় দাফনের প্রক্রিয়া চলছে বলে তখনই তিনি জানান।
উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার বলেন, “খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে করোনাভাইরাসে মৃতদের দাফন করতে চাইলেও স্থানীয়দের বাধার কারণে আমরা পারিনি। রাত তিনটা পর্যন্ত আমরা চেষ্টা করেছি। পরে মিরপুরের একটি করবস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে।”
আর মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, “মিরপুরের সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাদেরকে দাফন করেছি।”
তালতলা কবরস্থানে করোনাভাইরাসে মৃতদের দাফনের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সাব্বির বলেন, খিলগাঁও-তালতলা এলাকার কেউ করোনাভাইরাসে মারা গেলে এখানে দাফনের বিষয়ে তাদের কোন সমস্যা নেই।
“কিন্তু সবাইকে এখানে দাফন করা হলে সেটা এলাকাবাসীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।”
কবরটির চারপাশে প্রাচীর নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “আশপাশে কোনো বাউন্ডারি নাই। করবস্থানের জায়গাটির পাশেই রয়েছে ঝিল। তাই ঝিলের সাথে কোনাভাবে কবর মিশে গেলে তা জনসাধারণের জন্য ক্ষতির কারণ হবে।”
কবরস্থানের ভেতরে কুকুর ও বিড়ালের অবাধ চলাচলও শঙ্কার কারণ বলে মনে করেন তিনি।
তবে উত্তরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, “আমরা ঝিলের ওপর কবর দেব না, কবরের সাথে পানি মেশার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমি ডাক্তার হিসেবে বলতে চাই, যখন দাফন করা হবে, তারপর এটা থেকে বিষাক্ত কোনোকিছু ছড়ানোর কোনো সম্ভবনা নেই। সব বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আমরা দাফন করছি।”
ঢাকার বাইরে কেউ করোনাভাইরাসে মারা গেলে তাদের সেই এলাকাতেই দাফন করা হবে বলে জানান এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
কবরস্থানের স্বল্পতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “কবরের জন্য কোথাও খালি জায়গা নাই, মিরপুরেও খালি নাই। খিলগাঁও-তালতলায় খালি জায়গা আছে, তাই দুই সিটি করপোরেশন মিলে এখানে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। আমাদের ঈমানের সাথেও কাজটা করতে হবে, এটা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব।”