নিয়োগপত্র ও খাবার ভাতা দেওয়াসহ ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটে গেছেন নৌ শ্রমিকরা।
Published : 29 Nov 2019, 06:02 PM
শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ধর্মঘট শুরু হয়েছে বলে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের ধর্মঘট শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিটে শুরু হয়েছে। তবে রাত সাড়ে ১২টায় সদরঘাট থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে এমভি রাসেল-৩ ছেড়ে যাবে। এরপর আর সারা দেশে কোনো নৌযান চলাচল করবে না।”
তাদের এই ধর্মঘটে শনিবার রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
ধর্মঘটে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় শ্রমিক নেতা শাহ আলম বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে ১১ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করে আসছি। লঞ্চ মালিকপক্ষ শুধু আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন করেনি। গত বুধবারও সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বসেছিলাম, কিন্তু আবারও আশ্বাস। তাই শ্রমিকরা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধর্মঘটে যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়ায় আমরা ধর্মঘট করছি।”
তিনি বলেন, “আমরা আন্দোলন করেছিলাম, ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলাম। মালিকপক্ষ বলেছিল, আমাদের দাবিদাওয়া পূরণ করে দেবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো দাবিদাওয়া পূরণ করেনি।”
তার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার সদস্য হাম জালাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নৌযান শ্রমিকদের মূল দাবিগুলো মেনে নিয়ে লঞ্চ মালিকপক্ষ ২০১৬ সালে নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে পাঁচ বছরের একটি চুক্তি করেছিল। সে চুক্তির মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হবে। তাই তাদের ধর্মঘটে যাওয়া ‘অযৌক্তিক’।
তবে শাহ আলম বলেন, ওই সময় ১৫টি দাবির মধ্যে শুধু বেতন স্কেল ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছিল। বাকি ১৪টি দাবি তো পূরণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আখতার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবারের সভায় নৌ পরিবহন খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দেওয়ার বিষয়ে মনিটরিংয়ের জন্য নৌ পরিবহন অধিদপ্তর তাদের বার্ষিক সার্ভে চেক লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এ খাতের শ্রমিকদের খাদ্যভাতা দেওয়ার বিষয়েও বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে আগামী মার্চের মধ্যে সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এরপরেও ধর্মঘটে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় শ্রমিক নেতা শাহ আলম বলেন, “শ্রমিকরা বারবার আশ্বাসে বিশ্বাসী নয়, বাস্তবায়ন দেখতে চায়।”
এদিকে নৌযান শ্রমিকদের ‘ন্যায়সঙ্গত’ দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। সংগঠনের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল এক বিবৃতিতে নৌযান শ্রমিকদের দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, “নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পথে দাবি আদায় না হওয়ায় শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে নৌ ধর্মঘট আহ্বান করতে বাধ্য হয়েছে শ্রমিকরা।”
শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে লঞ্চ মালিকপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।