নয় মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিআরটিসির জোয়ার সাহারা ডিপোতে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করছেন চালক-শ্রমিকরা।
Published : 08 Jan 2019, 09:40 AM
ডিপোর ব্যবস্থাপক মো. নূর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চালক-শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
“তাদের কিছু দাবি দাওয়া আছে। এজন্য সকাল থেকেই তারা বিক্ষোভ করছে। সকালে কোনো বাস ডিপো থেকে বের হয়নি।"
এ ডিপো থেকে টঙ্গী-মতিঝিল, আবদুল্লাহপুর-মতিঝিল, কুড়িল বিশ্বরোড-পাঁচদোনা রুটের একতলা ও দ্বিতল বাস চলাচল করে। এছাড়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের স্টাফ বাস হিসেবে এ ডিপোর বাস চলাচল করে। ধর্মঘটের কারণে এসব বাস বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনকারীদের একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়ে এলেও বকেয়া বেতন আর পরিশোধ করা হচ্ছে না।
"আমাদের নয় মাসের বেতন বকেয়া। বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে গেছে। বাড়িওয়ালা প্রতিদিন কথা শোনায়। বাচ্চাদের স্কুলের বেতন দিতে পারি না। এইভাবে আর চলে না।”
বিআরটিসির জোয়ারসাহারা ডিপোতে একতলা, দ্বিতল এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মিলিয়ে ১২০টি সচল বাস রয়েছে। এসব যানবাহনের আয় থেকেই কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে লোকসানের কারণে এ ডিপোর প্রায় ৫০০ কর্মীর বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।
ধর্মঘটের খবর পেয়ে বিআরটিসির পরিচালক (অর্থ) ড. নাসিম হোসাইন এবং পরিচালক (কারিগরি) মাহবুবুর রহমান সকালে জোয়ার সাহারা ডিপোতে যান। তাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা শেষে ডিপোর ব্যবস্থাপক নূর ই আলম বেলা ১টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন।
কর্মচারীদের দাবিগুলো নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে জানিয়ে তিনি চালক-শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করেন। আর তা না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন।
তবে ধর্মঘটীরা পুরো টাকা পরিশোধ হলে কাজে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা দিলে জোয়ার সাহারা ডিপোতে অচলাবস্থা চলতেই থাকে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধের ‘চেষ্টা করছেন’ তারা। এরপরও তারা কর্মবিরতি চালিয়ে গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন।
"গত সাত আট মাস ধরে নিয়মিত বেতন হচ্ছে। তারপরও সাত-আটটা লোক সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য এগুলো করছে।"
বকেয়া বেতনের দাবিতে গতবছর জুলাই মাসেও একবার আন্দোলনে নেমেছিলেন বিআরটিসির জোয়ারসাহারা ডিপোর বাস চালকরা। তখন তাদের ১০ মাসের বেতন বকেয়া ছিল।
সারাদেশে বিআরটিসির ২২টি ডিপো আছে। এর মধ্যে ঢাকায় ডিপো আছে ছয়টি। এসব ডিপোতে প্রায় তিন হাজার চালক, টেকনিশিয়ান, অফিস সহকারী এবং নিরাপত্তারক্ষী কাজ করেন। সরকারি বেতন স্কেলে তারা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।
জোয়ার সাহারার মত ঢাকার অন্যান্য ডিপোতেও কর্মীদের বেতন কমবেশি বকেয়া রয়েছে বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন।