চবি শিক্ষক মাইদুলের মুক্তির দাবিতে ৫০ শিক্ষকের বিবৃতি

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার মামলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ শিক্ষক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2018, 10:47 AM
Updated : 26 Sept 2018, 10:47 AM

মঙ্গলবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অবিলম্বে মাইদুলের কারামুক্তি চেয়েছেন তারা।

এর কিছুক্ষণের মধ্যে ‘প্রচলিত আইন অনুসারে’ মাইদুলকে সাময়িক বরখাস্তের ঘোষণা দেয় চবি প্রশাসন।

বিবৃতি শিক্ষকরা বলেন, “আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি যে, এই ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করাকে অন্যায় হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তার শাস্তিস্বরূপ শিক্ষককে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অথচ একটা সময়ে এই সমাজে শিক্ষকদের এমন প্রতিবাদী ভূমিকাকে যথোচিত এবং গৌরবজনক হিসেবেই গণ্য করা হতো।”

শিক্ষক মাইদুলকে কারাগারে পাঠানোকে সারা দেশে ভিন্নমত দমন, ভয়-ভীতি দেখানো ও নিপীড়নমূলক চর্চার অংশ বলেই মনে করছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষকরা। 

বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, “একদিকে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের মাস্তানতন্ত্র, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় আইনি কাঠামোর নিবর্তনমূলক প্রয়োগ এবং সার্বিকভাবে সমাজে ভয় ও তোষণের রাজনীতির সম্প্রসারণ আমাদের এমন এক জায়গায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে যে, ক্ষমতার চোখে চোখ রেখে সাদাকে সাদা বলবার সাহসটুকুও আমরা হারাতে বসেছি।

“সরকারের কাছে দাবি জানাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিবর্তনমূলক জেলজুলুম থেকে মাইদুল ইসলামকে সসম্মানে মুক্তি দেওয়া এবং তাকে হুমকি প্রদানকারীদের শনাক্ত করে অতিসত্ত্বর বিচার এবং শাস্তির আওতায় আনা হোক।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হকের পাঠানো এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতারা শিক্ষকরা হলেন-

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিন, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক ও অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, উন্নয়ন ও অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল আসলাম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের  সহযোগী অধ্যাপক মোঃ আব্দুল মান্নান, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অতনু রব্বানী, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা খানম, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনাসির কামাল।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, একই বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস,  অধ্যাপক মানস চৌধুরী, অধ্যাপক আইনুন নাহার, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক স্বাধীন সেন, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রায়হান রাইন, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহীন সুমন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, একই বিভাগের নাসরিন খন্দকার, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাসউদ ইমরান, ইতিহাস বিভাগের পারভীন জলি ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিমেল বরকত।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শফিকুন্নবী সামাদী ও অধ্যাপক সৌভিক রেজা, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন, সহযোগী অধ্যাপক আ-আল মামুন, সহযোগী অধ্যাপক শাতিল সিরাজ, সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক গৌতম রায় এবং ফোকলোর বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আমিরুল ইসলাম।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদাফ নূর, সহযোগী অধ্যাপক খাদিজা মিতু, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম হোসেন হাবীব, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আর রাজী, সহকারী অধ্যাপক সায়মা আলম, সহকারী অধ্যাপক সুবর্ণা মজুমদার ও সহকারী অধ্যাপক সুদীপ্ত শর্মা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির আহমেদ ও সহকারী অধ্যাপক সৌম্য সরকার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অভিনু কিবরিয়া, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সেউতি সবুর, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের গণমাধ্যম অধ্যয়ন ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক হিয়া ইসলাম।

আরও খবর