নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ডকইয়ার্ড ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড পাওয়ায় এ বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির ধারা আরও গতি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চট্টগ্রাম অফিসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2018, 10:04 AM
Updated : 21 March 2018, 10:05 AM

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে বুধবার বিএন ডকইয়ার্ডকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডপ্রাপ্ত বিএন ডকইয়ার্ড আরও কার্যকরভাবে সেবা প্রদানের মাধ্যমে নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে।”

ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড দেওয়ার আগে একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নেভাল একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন।

নৌ বাহিনীর সদস্যদের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এ কমপ্লেক্স করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এর ফলে জাতির পিতার স্বপ্নের প্রশিক্ষণ একাডেমি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হল।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সমুদ্রে নৌবহরের সকল কর্মকাণ্ডকে নিরবচ্ছিন্ন রাখার গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হবে বিএন ডকইয়ার্ড।

“ত্রিমাত্রিক ও উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিনের সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত এবং আধুনিকায়নের জন্য বিএন ডকইয়ার্ড দেশপ্রেম ও পেশাগত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।”

ইতোমধ্যে ডকইয়ার্ডের নিজস্ব ফ্লোটিং ডক ‘বিএনএফডি সুন্দরবন’ ও বিএন স্লিপওয়ে এক হাজারের বেশি দেশি-বিদেশি যুদ্ধ জাহাজের সফল ডকিং ও রক্ষণাবেক্ষণ সম্পন্ন করেছে বলে জানানো হয় অনুষ্ঠানে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সম্পূর্ণ নিজস্ব জনবল, প্রযুক্তি ও কারিগরি দক্ষতা ব্যবহার করে এই ডকইয়ার্ড সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে যুদ্ধজাহাজসমূহকে নৌবাহিনীতে দীর্ঘকাল অপারেশনাল রাখছে। ফলে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে।”

বিএন ডকইয়ার্ডের ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডপ্রাপ্তি নৌবাহিনীর ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

বর্তমান সরকারের সময়ে নৌবাহিনীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ সংযোজনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, সমুদ্রে নজরদারি ও টহল জোরদার করতে আরও অত্যাধুনিক মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্র্যাফট ও হেলিকপ্টার কেনার প্রক্রিয়া চলছে।

পটুয়াখালীতে উড়োজাহাজ পরিচালনার সুবিধা সম্বলিত নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ নৌঘাঁটি এবং ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নৌঘাঁটি নির্মাণের কাজ চলছে। কুতুবদিয়ায় চলছে সাবমেরিন পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও জেটি সুবিধাসহ ঘাঁটি নির্মাণের কাজ। এছাড়া সীতাকুণ্ডের সন্দ্বীপ চ্যানেলে জাহাজ বার্থিং সুবিধা সম্বলিত ফ্লিট সদর দপ্তরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।

দেশের বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ সমুদ্রপথে হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এ বিশাল সমুদ্র এলাকার সুষ্ঠু পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নৌবাহিনী সফলভাবে দায়িত্ব পালন করছে।”

আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পরিচিতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌবাহিনীর জাহাজ বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে এবং নিজেরাও সফলভাবে মহড়ার আয়োজন করছে।

“উপমহাদেশে শুধু বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজই ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের আওতায় নিয়োজিত থেকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে।”