ময়মনসিংহের ভালুকায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু বোমা, গ্রেনেড এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল।
Published : 28 Aug 2017, 02:32 PM
জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলছেন, ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের কাশর এলাকায় আধা-পাকা ওই বাড়িতে বিস্ফোরণে নিহত আলম প্রামাণিক ছিলেন নিষিদ্ধ জঙ্গি দল জেএমবির ‘আত্মঘাতী স্কোয়াডের একজন সদস্য ও বোমা বিশেষজ্ঞ’।
সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার পর পুলিশের কাউন্টার টেরিজম ইউনিটের ভালুকা অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আধা-পাকা ওই বাড়িতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পরপরই বাড়ির অন্য সদস্যরা পালিয়ে যান। পরে পর ঘরের ভেতরে একজনের রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বাচ্চু জানান, বোমা বিস্ফোরণের পর দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান নিহতের স্ত্রী। পরে মসজিদের মাইকে তাদের ধরতে সাধারণ মানুষের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে হবিরবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ওই তিনজনকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা।
বাড়িওয়ালা আজিম উদ্দিন, তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার এবং তাদের দুই ছেলেকেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
জেলা পুলিশ ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা রোববার রাত থেকেই ভালুকার ওই বাড়ি ঘিরে রেখেছিলেন। সোমবার সকালে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা পৌঁছানোর পর সেখানে তল্লাশি শুরু হয়।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) নূরে আলম বিকালে সাংবাদিকদের বলেন, নিহত জঙ্গির ঘরে দুটি বড় আকারের শক্তিশালী বোমা, দুটি ট্রেসার, একটি গ্রেনেড ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। সেগুলো খোলা জায়গায় নিয়ে নিষ্ক্রিয়কারী করার পর অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে পুলিশ সুপার নুরুল ইসলাম সকালে সাংবাদিকদের জানান, আগের দিন দুই রকম তথ্য পেলেও খোঁজ খবর নিয়ে নিহতের পরিচয় তারা নিশ্চিত হয়েছেন। তার নাম আলম প্রামাণিক, বাড়ি নাটোর সদর উপজেলার তেলকুপি গ্রামে।
তিন দিন আগে ওই পরিবার বাসায় উঠলেও স্থানীয়রা তাদের খুব একটা দেখেননি বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, “নিহত জঙ্গি আলম প্রমাণিক জেএমবির আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন। তিনি বোমা তৈরিতে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তার পরিকল্পনা ছিল এখান থেকে বোমা তৈরি করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া।”
এ ঘটনায় মামলা করা হবে জানিয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে তারা আশা করছেন।