ভালুকার ‘জঙ্গি আস্তানায়’ বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল

ময়মনসিংহের ভালুকায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানার ভেতরে তল্লাশি শুরু করেছেন পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2017, 05:32 AM
Updated : 28 August 2017, 08:26 AM

ওই বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত সন্দেহভাজন জঙ্গির স্ত্রী ও দুই সন্তানের পাশাপাশি শেখ ভিলা নামের ওই বাড়ির মালিক, তার স্ত্রী ও তাদের দুই ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, নিহতের পরিচয় সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। তার নাম আলম প্রামাণিক, বাড়ি নাটোর সদর উপজেলার তেলকুপি গ্রামে।

সুতার ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে স্ত্রী পারভীন আক্তার ও দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গত ২৪ অগাস্ট ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের কাশর এলাকার ওই বাড়িতে ওঠেন সন্দেহভাজন ওই জঙ্গি।

রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আধা-পাকা ওই বাড়িতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পরপরই বাড়ির অন্য সদস্যরা পালিয়ে যান। পরে পর ঘরের ভেতরে একজনের রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পর পুলিশ এসে বাড়িটি ঘিরে ফেলে। বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিক ধারণার কথা বলেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ময়মনসিংহ দক্ষিণ) নূরে আলম জানান, তিন দিন আগে ওই পরিবার বাসায় উঠলেও স্থানীয়রা তাদের দেখেনি বলে জানিয়েছে।

ঘটনার পর বাড়ির মালিক আজিম উদ্দিন (৪৮) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, নিহত ৩৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন আবদুল্লাহ নামে, বলেছিলেন তাদের বাড়ি কুষ্টিয়া।

বাড়িওয়ালা আজিম উদ্দিন, তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার এবং তাদের দুই ছেলেকে রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।

হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বাচ্চু জানান, বোমা বিস্ফোরণের পর দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান নিহতের স্ত্রী। পরে মসজিদের মাইকে তাদের ধরতে সাধারণ মানুষের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে হবিরবাড়ী বাসন্ট্যান্ড এলাকা থেকে ওই তিনজনকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম জানান, ওই পরিবারের একবছর বয়সী সন্তানও বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি রোববার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের বলেন, নিহত ব্যক্তি কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত বলে তারা ধারণা করছেন।

পুলিশ সুপার নুরুল ইসলাম সোমবার সকালে নিহতের নাম পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার কথা বললেও সে কোন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল, সে বিষয়ে নতুন কোনো তথ্য দেননি।  

তিনি বলেন, “বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের সদস্যরা ঢাকা থেকে এসে কাজ শুরু করেছেন। ভেতরে আরও বিস্ফোরক আছে কি না তারা দেখবেন। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করি।”