দেশজুড়ে দাবদাহ চলছেই, বৃষ্টির অপেক্ষা

ফাইল ছবি

টানা তাপপ্রবাহের ২৯তম দিন রোববার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। এদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আগের দুদিন এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়, ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চলমান তাপপ্রবাহ অন্তত আরো ৩ দিন অব্যাহত থাকবে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, “মে মাসের ২ তারিখ বৃহস্পতিবার বা তার পরে দেশের উত্তর, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের এলাকাগুলো বিশেষ করে ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টিপাতের বিস্তার লাভ করবে। সে সময় এসব এলাকার চলমান তাপপ্রবাহ প্রশমিত হবে।

“এছাড়া ঢাকাসহ দেশের পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে খুলনা, রাজশাহী অঞ্চলের চলমান তাপপ্রবাহ আরও অব্যাহত থাকবে। ৪-৫ তারিখের দিকে এসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।”

আবহাওয়াবিদ নাজমুল জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকাসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে। তবে তাতে তাপপ্রবাহ কমবে না; মৃদু থেকে অতি তীব্র যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকতে পারে।

বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

তাপপ্রবাহের কেমন বিস্তার

রোববার সন্ধ্যার বুলেটিনে দেশের ৫২ জেলার উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বুলেটিনে বলা হয়, যশোর ও রাজশাহীর উপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নওগাঁ, পাবনা ও নীলফামারী জেলাসহ খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আর মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বাকি অংশে। একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে বরিশাল বিভাগে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, এপ্রিল উষ্ণতম মাস বাংলাদেশ। এবার টানা ২৯তম দিন তাপপ্রবাহ চলছে।

তিনি জানান, এর আগে ২০১৪ সালে ৫-৩০ এপ্রিল টানা ২৬ দিন টানা তাপপ্রবাহ ছিল। ২০১৬ সালে ৬-৩০ এপ্রিল টানা ২৫ দিন তাপপ্রবাহ ছিল। ২০২৩ সালে ১৩ এপ্রিল থেকে ৫ মে টানা ২৩ দিন তাপপ্রবাহ বয়ে যায়।

গত বছর ১৭ এপ্রিল পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।

স্বাধীনতার পরের বছরে ১৮ মে ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

“এপ্রিল-মে মাসের প্যাটার্নটাই এরকম- কয়েকদিন পর পর কালবৈশাখীর ঝড় হয়। যেখানে কালবৈশাখী হলে তাপমাত্রা কমে যায়। মে মাসের শুরুতে তাপপ্রবাহের বিস্তার কমে আসতে পারে,” বলেন আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক।

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টির কোনো শঙ্কা নেই বলে জানান তিনি।