পুলিশের ছোঁড়া কাঁদুনে গ্যাসের শেলের আঘাতে দুচোখ হারাতে চলা তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানের চিকিৎসার দায়ভার নেওয়া এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন পণ্ড করে দিয়েছে ছাত্রলীগ।
Published : 23 Jul 2017, 01:18 PM
রোববার সকালে প্রথমে কলেজ ক্যাম্পাসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পৌনে ১১টার দিকে মহাখালীর আমতলী এলাকায় মানববন্ধনে দাঁড়ান প্রায় দেড়শ’ শিক্ষার্থী।
মানববন্ধন চলার ১৫ মিনিটের মাথায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী মিরাজুল ইসলাম ডলার এবং সাধারণ সম্পাদক মানিক হোসেন মানিক একদল ছাত্রলীগ নেতাকর্মী নিয়ে গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়।
এ সময় মানববন্ধনকারী পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন, আনারুলসহ তিনজনকে চড়-থাপ্পড়ও দিতে দেখা যায়। এরপর শিক্ষার্থীদের কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে যান ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হওয়া রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে বৃহস্পতিবার শাহবাগে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ।
ওই দিন রাতেই অজ্ঞাতনামা ১২শ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করে পুলিশ।
রোববারের মানববন্ধন পণ্ড করার পর কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের জন্য দুজন ছাত্র প্রতিনিধি ঠিক করে দেন ছাত্রলীগের সভাপতি ডলার।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মানববন্ধন ভেঙে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী আনিতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করছিলাম। কলেজ ক্যাম্পাসে দাঁড়াতে দিল না, এরপর এখানে এসে মারধর করছে। এ কেমন বর্বরতা!
“তারা বলছে, আমরা সরকারবিরোধী কাজ করছি।আমরা কিসের সরকারবিরোধী কাজ করছি? আমরা শুধু আমাদের সিদ্দিকুরের দায়ভার নেওয়ার কথা বলছি। এভাবে পুলিশ একজনকে অন্ধ করে দিবে, আর আমরা কথা বলতে পারব না।”
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা সিদ্দিকুরের দায়ভার সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনাসহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সুস্থ হওয়ার পর চাকরির ব্যবস্থা করারও দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। শাহবাগে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ভণ্ডুল করে দেওয়ার বিষয়ে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ডলার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিদ্দিকুরের চিকিৎসার ব্যবস্থা সবচেয়ে ভাল ডাক্তার দিয়ে করানো হচ্ছে। আমরা চাই না, এভাবে আন্দোলন হোক। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখানে আন্দোলন করছে ঠিক, কিন্তু তাদের মধ্যে দুষ্কৃতকারীরা ঢুকে যদি সংঘর্ষ বাধায় তার দায়ভার কে নিবে।”
শাহবাগেও শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কিছু দুষ্কৃতকারী ঢুকে সেটাকে সংঘর্ষের দিকে নিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের দাবি মামলা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, “অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলা টিকবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এই মামলা নয়, যারা সংঘর্ষ ঘটানোর জন্য সেখানে গিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এটা।”