নিজের কার্যালয়ে বসে ‘ঘুষ নেওয়ার সময়’ গ্রেপ্তার নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম ফখরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইদিনের হেফাজতে পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
Published : 19 Jul 2017, 04:54 PM
ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস বুধবার তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এ আদেশ দেন।
একটি জাহাজের নকশা অনুমোদন করতে মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে অধিদপ্তরের কার্যালয়ে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় মঙ্গলবার তাকে হাতেনাতে আটক করে দুদকের একটি দল।
এরপর এ ঘটনায় দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বুধবার পাঁচদিনের হেফাজত চান। শুনানি শেষে বিচারক তাকে দুইদিন হেফাজত নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
শুনানিতে রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে আবেদন করেন ফখরুল ইসলামের আইনজীবী কবির হোসাইন।
আদালতে আইনজীবী কবির দাবি করেন, প্রকৌশলী ফখরুল ষড়যন্ত্রের শিকার। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি মিথ্যা অভিযোগে।
এসময় ওই দাবির বিরোধিতা করে দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, “দুদকের নিয়ম অনুযায়ী ফাঁদ পেতে তাকে ধরা হয়েছে। ঘুষের টাকার যে নম্বর আগে জানা যায়, সেই নম্বরের টাকাসহ তিনি হাতেনাতে ধরা পড়েন। ঘটনা পরিষ্কার, এতে কোনো ক্যামোফ্লেজ নেই।”
বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীর কাছ থেকে ‘ঘুষ’ নেওয়ার সময় দুদকের দলটি ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছিলেন।
অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল অধ্যাদেশ-১৯৭৬ এর ধারা ৫ (ক) অনুযায়ী নৌ পরিবহন অধিদপ্তরে নকশা জমা হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ অনুমোদন দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
কিন্তু অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ফখরুল ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত বেঙ্গল মেরিনের ২২টি জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য বিভিন্ন সময় প্রতিটি জাহাজের আকার ভেদে পাঁচ থেকে ১৬ লাখ টাকা করে ঘুষ দাবি করেন বলে অভিযোগ।
তাকে গ্রেপ্তারের পর দুদক কর্মকর্তা প্রণব জানান, ‘এমভি নওফেল লিহান’ নামের একটি জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য গত বছরের ১৩ এপ্রিল আবেদন করা হয়। এর জন্য ফখরুল বেঙ্গল মেরিনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি এএনএম বদরুল আলমের কাছে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
বদরুল বিষয়টি কমিশনকে অবহিত করলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টকে গ্রেপ্তারে ঘুষ দেওয়ার পূর্ব নির্ধারিত সময় মঙ্গলবার দুপুরে বিআইডব্লিউটিএ ভবনের চারদিকে দুদকের ১১ সদস্যের একটি দল অবস্থান নেয়।
এরপর নিজের দপ্তরে বদরুলের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় ফখরুল ইসলামকে হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করা হয়।