প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক পেটানোর হুমকির জবাবে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, কারো হুমকিতে ভীত নন তিনি।
Published : 30 May 2017, 09:15 PM
মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেইসবুক পাতায় এক পোস্টে এ প্রতিক্রিয়া দেন যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা মঞ্চের এ আহ্বায়ক।
আগেও হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর হুমকির প্রসঙ্গ টেনে ফেইসবুক পাতায় ইমরান লিখেছেন, “মোদ্দা কথা হচ্ছে কারো হুমকিতেই আমি ভীত নই। আমার জীবন সবসময়ই হুমকির মুখে- সেই হুমকি উগ্রবাদীদের নামে আসুক কি ছাত্রলীগের নেতার নাম হয়ে আসুক, তাতে হুমকির গুরুত্ব তো আর কমছে না!”
হেফাজতে ইসলামের দাবি মেনে সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে গণজাগরণ মঞ্চের মিছিল থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠায় মুখপাত্র ইমরানকে সোমবার পেটানোর হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি মিছিল থেকে এই হুমকি দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, “এই ইমরান এইচ সরকারকে শাহবাগে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যেখানে ইমরান এইচ সরকার ও সনাতনকে (সংস্কৃতিকর্মী) যেখানেই দেখা হবে, সেখানে কুত্তার মতো পেটানো হবে।”
গণজাগরণ মঞ্চ একটি অহিংস সংগঠন হওয়ায় এর ‘লোকজনকে মারা সবচাইতে সহজ ব্যাপার’ উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, “এটার জন্য এতো বড় হম্বিতম্বির কোনো প্রয়োজন নেই।”
ইমরান লিখেছেন, “মজার ব্যাপার হলো, যে মিছিলের কথা বলা হচ্ছে সেই মিছিলটি হয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যায়। শুক্রবার, শনিবার ও রোববারে কোনো প্রতিক্রিয়া কোনো ছাত্রলীগ থেকে পাওয়া গেল না।
“রোববার রাতে একটি টিভি চ্যানেলে হেফাজতের এক নেতাকে আমি তুলোধুনো করার পরেই পরদিন হুট করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার খেয়াল হলো যে আমাকে পেটানো দরকার এবং সেই পেটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কটূক্তির অভিযোগ নিয়ে আস্ফালন শুরু হলো! -এর মাঝে কোনো ইঙ্গিত আছে কী না সেটাই দেখার বিষয়।”
তিনি লেখেন, “প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করা হয়েছে বলে যে অজুহাত তারা দিচ্ছে সেটি সত্যের অপলাপ। গণজাগরণ মঞ্চ কোনো নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে কোনো বক্তৃতা বিবৃতিতে অশোভন ভাষা ব্যবহার করে না। জাতীয় নেতৃবৃন্দ তো দূরের কথা, কোনো বৈধ রাজনৈতিক দলের আঞ্চলিক অথবা মাঝারি সারির কোনো নেতার সম্পর্কে কথা বলার সময়ও আমরা অসৌজন্যমূলক কিছু বলি না।”
‘বয়সে প্রবীণ ও একজন নারী’ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ‘স্পষ্টতই বানোয়াট ও হাস্যকর’ বলে উল্লেখ করেন ইমরান এইচ সরকার।
তিনি লেখেন, “কিছু ছাত্রনেতা নিজেদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি কিংবা হেফাজতী কোনো কানেকশনের কারণে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কটূক্তির অজুহাত তুলে মাঠ গরম করতেই পারে, সেটা নিয়ে আমার আলাদা কোনো মাথাব্যথা নেই। এগুলো নিতান্তই তাদের ব্যক্তিগত লাভালাভের বিষয়।”
এক্ষেত্রে সম্প্রতি হেফাজতের একটা বিবৃতির পেছনে সরকার সমর্থক কেউ আছে কি-না সে সন্দেহও প্রকাশ করেন ইমরান।
“তাদের বিবৃতির ভাষা দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে হেফাজতিদেরকে আসলে পর্দার আড়াল থেকে কারা পরিচালিত করছে। ছাত্রলীগের কিছু নেতার হঠাৎ করে এই তোড়জোর দেখে সেই প্রশ্নটি আমারও মনে জেগেছে।”