‘সিটিং সার্ভিস’ বন্ধ করার পর যাত্রী পরিবহন বন্ধ করা এবং সরকারি নিয়মের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী বাসের রুট পারমিট বাতিলের দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
Published : 19 Apr 2017, 12:00 AM
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানান।
তিনি বলেন, “ঢাকা মহানগরে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ যাত্রী গণপরিবহন ব্যবহার করে। সেই হিসাবে এখানে প্রতিদিন গড়ে ৪ হাজার ২৫০ জন যাত্রীর জন্য রয়েছে মাত্র একটি বাসের ব্যবস্থা। বেশিরভাগ বাস যাত্রী পরিবহনের অনুপোযোগী লক্কড়-ঝক্কড়। এরমধ্যে চলমান পরিবহন সংকট এই অবস্থাকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।
“যে সব বাস সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে, জরুরি ভিত্তিতে সেই সব বাস চিহ্নিত করে তাদের রুট পারমিট বাতিল করা হোক।”
ঢাকায় যাত্রী ভোগান্তি লাঘবে পরিকল্পিত ও সমন্বিত উদ্যোগের দাবি জানান তিনি।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ১৫ এপ্রিলের পর থেকে ‘সিটিং সার্ভিস’ বন্ধের ঘোষণা দেয়। পরদিন থেকে অভিযানে নামে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
গত রোববার ওই ঘোষণার বাস্তবায়ন শুরুর পর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বচসা-মারামারির ঘটনা ঘটে বিভিন্ন স্থানে। অনেক মালিক রাস্তায় গাড়ি না ছাড়ায় যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন।
সোম ও মঙ্গলবারও বাস না পেয়ে বিভিন্ন মোড়ে যানবাহনের আশায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় যাত্রীদের। কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথম দুদিন তাদের এক তৃতীয়াংশ গাড়ি রাস্তায় নামেনি।
বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল বলেন, “গত দুই দিনে নগরীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসের প্রায় ৪০ শতাংশ রাস্তায় নামেনি। আমাদের টিম প্রায় ৫০০ যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে। বাসে চলতে গিয়ে বিশেষ করে নারী, শিশু ও জ্যেষ্ঠ নাগরিকরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন।
“সরকারি ভাড়ার তালিকা দেখতে চাওয়ায় বা তালিকা অনুযায়ী ভাড়া দিতে চাওয়ায় অনেক যাত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার, এমনকি গায়ে হাত তোলার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে।”
এই প্রেক্ষাপটে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আরও কিছু দাবি জানিয়েছে। সেগুলো হলো- সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া আদায়ে রুটভিত্তিক, কোম্পানিভিত্তিক অভিযান পরিচালনা, বাসের গায়ে লেখা সিটিং সার্ভিস, গেইটলক সার্ভিস, স্পেশাল সার্ভিস, কম স্টপেজ সার্ভিস ইত্যাদি মুছে ফেলা, বাস চলাচলকালে স্টপেজ প্রথা মানা এবং পারমিটের শর্তানুযায়ী চলাচল নিশ্চিত করা, রিপ্লেসমেন্ট পদ্ধতিতে ফিটনেসবিহীন গাড়ি উচ্ছেদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া এবং অধিক যাত্রী ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাপক গণপরিবহন নামানোর জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ, নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরীফ উপস্থিত ছিলেন।