সম্পদের তথ্য গোপনের মামলা বাতিলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের আবেদনে দেওয়া রুল শুনানিতে ‘বিব্রত বোধ’ করেছে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ।
Published : 02 Nov 2016, 02:12 PM
বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চ ‘বিব্রত বোধ’ করায় এখন প্রধান বিচারপতিকে অন্য একটি বেঞ্চ ঠিক করে দিতে হবে।
বিগত জরুরি অবস্থার সময়ে দুদকের দায়ের করা এ মামলার কার্যক্রম আদালতের নির্দেশে ২০০৮ সাল থেকে স্থগিত রয়েছে।
দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ মামলায় হাই কোর্ট যে রুল দিয়েছিল, তা বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য তোলা হয়েছিল।
“দ্বৈত বেঞ্চ মামলার রুল শুনানি করতে বিব্রতবোধ করে মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দেন। প্রধান বিচারপতি নতুন কোনো বেঞ্চে পাঠালে সেখানে এর শুনানি হবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে এই আইনজীবী জানান, বিব্রত হওয়ার কোনো কারণ আদালত বলেনি।
ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একেএম মনিরুজ্জামান কবির সাংবাদিকদের জানান, বেঞ্চের দুই বিচারকের মধ্যে একজন বিব্রতবোধ করেন। তবে তার নাম তিনি বলেননি।
তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও শ্বাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক।
মামলায় তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জোবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারেক তার স্ত্রীর নামে ৩৫ লাখ টাকার দুটি এফডিআর করে দেন। এভাবে জোবাইদা তার স্বামীকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেছেন।
২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। জোবাইদা রহমানের আবেদনে হাই কোর্ট ওই বছরের ৮ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে এ মামলার কার্যক্রম দুই মাসের জন্য স্থগিত করে রুল দেয়।
স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে দুদক আপিলে গেলে তাদের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। সেই থেকে জোবাইদার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
মামলা স্থগিত চেয়ে জোবাইদার আবেদনে দুদককে বিবাদী করা হয়নি, এরপর গত বছরের এপ্রিলে এ মামলায় দুদক পক্ষভুক্ত হয়।
খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক ২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। এরপর থেকে তারা লন্ডনেই রয়েছেন।
মুদ্রা পাচারের অভিযোগে গত জুলাই মাসে তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকার অর্থদণ্ড দেয় হাই কোর্ট। এছাড়া শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টাসহ দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানীর অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান মাহবুব আলী খানের মেয়ে জোবাইদা ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন। তার দুই বছর আগে তারেকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
স্বামীর সঙ্গে লন্ডন যাওয়ার সময় শিক্ষা ছুটি নিয়েছিলেন জোবাইদা। পরে তা বাড়ানো হয়।
এরপর ছুটি বাড়ানোর আবেদন নাকচ হলেও দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তাকে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।