দর্শনায় কৃষি বিভাগের ভবন নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল এবং ১০ বছরের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে সরকারি কাজে নিষিদ্ধ করে নেওয়া সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 16 Jun 2016, 08:01 PM
সরকারি ওই ভবন নির্মাণকাজ তদারকি প্রতিষ্ঠানের আবেদনে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়।
কৃষি সচিব, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ ফাইটোসেনেটারি ক্যাপাসিটি শক্তিশালীকরণ প্রকল্প পরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ‘উদ্ভিদ-সংগ নিরোধ ভবন’ নির্মাণ কাজ তদারকির জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের সঙ্গে ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্প কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয়েছিল। ভবনটি নির্মাণ করছিল জয় কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।
ওই ভবনের নির্মাণকাজে লোহার রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের ছবি গত এপ্রিলে গণমাধ্যমে এলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ওঠে। প্রশাসন তখন নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়ে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে।
এরপর চুয়াডাঙ্গায় কৃষি বিভাগ ভবন ঠিকাদার ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১২ এপ্রিল মামলা করে। জয় কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনি সিং, ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সাত্তার ও প্রকল্প বিশেষজ্ঞ আইয়ুব হোসেনকে মামলায় আসামি করা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২০ এপ্রিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়ামকে একটি চিঠি পাঠিয়ে জানায়, দর্শনা ল্যান্ড পোর্ট প্ল্যান্ট কোয়ারেনটাইন সেন্টার নির্মাণ সংক্রান্ত কাজ তদারকি ও তত্ত্বাবধানে গাফলতি, দুর্নীতি ও প্রতারণামূলক কাজে জড়িত থাকার দায়ে চুক্তি বাতিল এবং ১০ বছরের জন্য ভবিষ্যতে সকল প্রকার সরকারি কাজে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করা হল।
এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়ামের পক্ষে আবু বকর সিদ্দিক হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন। আবেদনকারীর যুক্তি, বিধান অনুসারে এমন সিদ্ধান্তের ৩০ দিন আগে নোটিস দিতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তিন দিন আগে নোটিস দেওয়া হয়েছিল।
অধিদপ্তরের এই ধরনের চিঠি পাঠানোর এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলে রিট আবেদনকারী।
আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
মোতহার হোসেন সাজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০ এপ্রিলের ওই নোটিসের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে আবেদনটি করা হয়। আদালত শুধু রুল দিয়েছেন।”
স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগ নিরোধ কার্যালয়ের জন্য দর্শনা পৌরসভার পাশে ৩ হাজার ৭৫০ বর্গফুট আয়তনের একটি আধুনিক ল্যাবরেটরি ও অফিস ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয় গত বছরের ১ ডিসেম্বর। কাজ শেষ করে আগামী জুন মাসে ভবনটি হস্তান্তরের কথা ছিল।
অধিদপ্তরের ‘ফাইটো স্যানিটারি ক্যাপাসিটি শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকায় ভবনটি নির্মাণ করছে ঢাকার প্রতিষ্ঠান জয় কনস্ট্রাকশন।