কোহিনূর কেমিকেলসের আইন বিভাগের এক কর্মকর্তাকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে র্যাব।
Published : 22 Apr 2016, 03:34 PM
পলাশ কুমার রায় নামের ওই আইনজীবীকে ‘অপহরণ করা হয়েছে’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তার মা কয়েকদিন আগে কোহিনূরের এমডি রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেছিলেন।
তবে র্যাব বলছে, ‘বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ’ করে ‘প্রতারক’ ওই আইনজীবী ২৪ দিন ধরে ‘নিজেই আত্মগোপনে’ ছিলেন। মায়ের সঙ্গে তার ‘নিয়মিত যোগাযোগ’ ছিল।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা মো. খালিদ বোরহান শুক্রবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে মনিপুরি পাড়ার এক বাসা থেকে অ্যাডভোকেট পলাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
পরে বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “কোম্পানির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি পলাশের কাছে রয়েছে। বিভিন্ন পাওনাদার প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে দেওয়ার জন্য তিনি ৩১ লাখ ৭ হাজার টাকা কোহিনূর কেমিকেলস থেকে নেন। কিন্তু ওই হিসাবে গড়মিল পাওয়া যায়।”
গত ২৩ মার্চ কোম্পানির অর্থ ও দলিল বুঝিয়ে দিতে পলাশকে উকিল নোটিস দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, জবাব না পেয়ে ৩১ মার্চ মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করে কোহিনূর কর্তৃপক্ষ।
ওই মামলায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। অবশ্য পলাশ তার আগেই ‘আত্মগোপনে চলে যান’ বলে দাবি করা হয় র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে।
এদিকে পলাশকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে তার মা মীরা রানী রায় ৩০ মার্চ তেজগাঁও থানায় একটি জিডি করেন বলে ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান।
পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মীরা রানী এরপর ৪ এপ্রিল ঢাকার হাকিম আদালতে অভিযোগ নিয়ে যান।
সেখানে তিনি বলেন, একটি জমির ‘ভুয়া নামজারির কাগজপত্র তৈরি’ করা নিয়ে বিরোধে পলাশ ‘চাকরি ছেড়ে দেওয়ায়’ তাকে ‘হত্যার উদ্যেশ্যে অপহরণ’ করা হয়েছে।
কোহিনূরের এমডি রেজাউল করিমসহ দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় ওই আর্জিতে।
এরপর ৫ এপ্রিল ঢাকার জজ কোর্ট রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলন করে মীরা রানী বলেন, তার ছেলে বেঁচে আছে, নাকি তাকে ‘মেরে ফেলা হয়েছে’- তা তিনি জানেন না।
পলাশের ‘সন্ধান’ দাবিতে ১৯ এপ্রিল আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে একটি মানববন্ধন হয়, যেখানে তার মাও উপস্থিত ছিলেন। ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় ওই মানববন্ধন থেকে।
র্যাব-২ এর অধিনায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বিষয়টি গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে জানাজানি এবং পাল্টাপাল্টি মামলা হলে র্যাবের নিকট একটি রহস্যজনক ঘটনা বলে পরিগণিত হয়।”
এরপর র্যাব তদন্তে নামে এবং এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে মনিপুরি পাড়া থেকে অ্যাডভোকেট পলাশকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান তিনি।
পলাশকে তেজগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আত্মগোপনে যাওয়ার পর ঢাকার বিভিন্ন বাসায় এবং পঞ্চগড়ে কিছুদিন অবস্থান করেছেন বলে পলাশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের জানিয়েছেন।”