সাংবাদিক শফিক রেহমানকে ডিবি পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
Published : 16 Apr 2016, 10:08 AM
বিএনপিঘনিষ্ঠ এই সাংবাদিকের স্ত্রী তালেয়া রেহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শনিবার সকালে কয়েকজন এসে তার স্বামীকে ইস্কাটনের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়।
“ডিবি পরিচয়ে কয়েকজন লোক সাড়ে ৭টার দিকে বাসায় ঢুকে। ‘আমাদের সঙ্গে যেতে হবে’ বলে তাকে নিয়ে যায় তারা,” বলেন ডেমোক্রেসিওয়াচের নির্বাহী পরিচালক তালেয়া।
এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্মকমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই।”
প্রখ্যাত অধ্যাপক সাইদুর রহমানের ছেলে শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ডেমোক্রেসিওয়াচের নির্বাহী পরিচালক।
ইস্কাটনের বাড়ির কম্পাউন্ডে সামনের দোতলা বাড়িতে ডেমোক্রেসিওয়াচের কার্যালয়। পেছনে তিনতলা বাড়ির তৃতীয় তলায় সপরিবারে থাকেন শফিক রেহমান।
তালেয়া সাংবাদিকদের বলেন, “তারা (পুলিশ) এসে নিজেদের বৈশাখী টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জানায়, তারা শফিক রেহমানের সাক্ষাৎকার নিতে এসেছে। যদিও তার (শফিক) কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট এই সময় ছিল না। একটু সন্দেহও হয়েছিল।”
ওই ব্যক্তিদের সামনের ভবনে ডেমোক্রেসিওয়াচের কার্যালয়ে বসতে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের চা-নাশতাও দেওয়া হয় তাদের।
তালেয়া জানান, তিন ব্যক্তি নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তাদের একজনের হাতে একটি ডিজিটাল ক্যামেরা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। শফিক রেহমানের দেরি দেখে ওই তিনজন ভেতরের বাড়ির দিকে রওনা হয়।
বাড়ির বাবুর্চি মতিন মোল্লা বলেন, ওই তিনজন একটি কার্ড তার হাতে দিয়ে তা তিনতলায় শফিক রেহমানকে পৌঁছে দিতে বলেন।
“স্যার কার্ড দেখে তা ম্যাডামকে দিতে বলেন। আমি কার্ডটি নিয়ে নিচে নামতে নামতে দেখি স্যারও নেমে আসছেন। ওই সময় ওই তিনজনও উপরে উঠতে থাকে। তারা ‘আমরা ডিবির’ লোক বলে কার্ডটি আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। স্যারকে ধরে নিয়ে যায়।”
পুলিশের মাইক্রোবাসটি বাড়ির সামনেই ছিল। সেখানে শফিক রহমানকে তোলার পর তা মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের দিকে চলে যায়।
শফিক রহমান সম্পাদিত সাপ্তাহিক ‘মৌচাকে ঢিল’র সহকারী সম্পাদক সজীব ওনাসিস সাংবাদিকদের বলেন, যে তিনজন শফিক রেহমানকে আটক করতে এসেছিল, তারা দুদিন আগে ভূমিকম্পের পরে বৈশাখীর টেলিভিশনের নাম করে সাক্ষাৎকার নিতে এসেছিল।
তবে সেদিন তারা শফিক রেহমানের দেখা পাননি।
শফিক রেহমান নানা সংবাদ মাধ্যমে কাজ করলেও গত শতকের ৮০ এর দশকে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন সম্পাদনার মধ্য দিয়ে ব্যাপক পরিচিতি পান।
তখন সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের রোষানলে পড়ে তাকে বাংলাদেশ ছাড়তেও হয়েছিল। এরশাদের পতনের পর ফের বাংলাদেশে ফেরেন বিবিসিতে কাজ করে আসা এই সাংবাদিক।
এক দশক পরে বিএনপির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠতে দেখা যায়। এর মধ্যে দৈনিক যায়যায়দিন বের করেন তিনি। তবে চালাতে না পারার পর যায়যায়দিনের স্বত্ব বিক্রি করে দেন তিনি।
‘লাল গোলাপ’ নামে একটি অনুষ্ঠান নিয়ে এখন সম্প্রচার মাধ্যমে সক্রিয় তিনি। খালেদা জিয়ার নানা কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায়।