ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানকে ‘অশিক্ষিত ডক্টরেট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
Published : 09 Nov 2015, 09:13 PM
সোমবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “অশিক্ষিত ডক্টরেট, আইন বুঝবেন না, পার্লামেন্ট বুঝবেন না। অবিলম্বে অবনত মস্তকে ক্ষমা চাইবেন। জীবনে কোনদিন পার্লামেন্ট ও সংবিধান নিয়ে কথা বলবেন না, এই অঙ্গীকার করতে হবে।”
“আপনারা পার্লামেন্টকে পুতুল নাচের রঙ্গমঞ্চ বললেন, অথচ এই পার্লামেন্টে কমিটিতে আপনারা কথা বলে গেছেন। তাহলে পুতুল নাচের রঙ্গমঞ্চে আপনারা বানর নাচ নেচেছেন?”
গত ২৫ অক্টোবর ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছিলেন, “বর্তমান সংসদ ক্ষমতাসীন দলের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের ভূবনে পরিণত হয়েছে। সংসদের বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রাতিষ্ঠানিক ফোরামে পরিণত হয়েছে।”
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর এর সমালোচনায় মুখর হন সরকারি দলের নেতারা।
পয়েন্ট অব অর্ডারে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীও ইফতেখারুজ্জামানকে ইঙ্গিত করে কথা বলেন।
মতিয়া বলেন, “আমাদের স্পিকার সিপিএর (কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন) চেয়ারপারসন। সাবের হোসন চৌধুরী আইপিইউর (ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন) প্রেসিডেন্ট। সিপিএর নাম শোনেননি? এ নাম না শুনে ডক্টরেট কীভাবে করলেন? রঙ্গমঞ্চ বললেন সংসদকে। আসলে সহেনা যাতনা... নিশিদিনও বসে আছি শুধু পথপানে চেয়ে।
“বসে থাকেন, নির্বাচন ৫ বছর হবে। নানান সূতার টানে আপনারা নাচতে পারেন। আপনাদের এই নাচের উদ্দেশ্য আছে। যখন সামরিক শাসন আসে তখন তো আপনারা কথা বলেন না। এই সরকারের বিদেশিদের কাছে আনুগত্য নেই। আপনাদের আছে।”
প্রতিবেদনে নতুন নির্বাচনের পক্ষে টিআইবি অবস্থান জানানোর পর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
আর নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে বিদেশি এবং প্রকাশক খুনের সঙ্গে টিআইবির প্রতিবেদন প্রকাশের যোগসূত্র রয়েছে।
পার্লামেন্ট ওয়াচ প্রতিবেদন নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় ২ নভেম্বর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এক বিবৃতিতে বলে, “সংবিধান ও আইনসম্মতভাবে বিশ্বব্যাপী চলমান নাগরিক সংগঠন কর্তৃক সংসদ কার্যাবলী পরিবীক্ষণ চর্চার ন্যায় এই অধিকার ও দায়িত্ব পালনের বাইরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য টিআইবির নেই।”