জমি নিয়ে বিরোধের মীমাংসা করার নামে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক গৃহবধূকে বাড়ির উঠানে প্রকাশ্যে চুল ধরে মারধর করেছেন স্থানীয় এক মাতবর।
Published : 06 Oct 2015, 01:25 PM
সোমবার এ ঘটনার পর কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা হওয়ার কথা জানিয়েছেন ওসি ওমর ফারুক। তবে ২৪ পরও মাতবরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ওই গৃহবধূর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়েছে বলে পরিবার অভিযোগ করলেও লতিফপুর গ্রামের মাতবর জালাল উদ্দিন তা অস্বীকার করেছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “অন্যের স্ত্রীকে মারধর করা অপরাধ আমি জানি। তারপরও গ্রামের মাতবর হিসেবে কর্তব্য পালন করেছি।”
মারধরের শিকার ৪২ বছর বয়সী ওই নারীকে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তার দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে কালিয়াকৈরের একটি কলেজে স্নাতকে পড়েন। ছোট ছেলে স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। আর তাদের বাবা স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
বড় ছেলে সজল (ছদ্মনাম) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তার মামার সঙ্গে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সোমবার দুপুরে তার মাকে বাড়িতে ডেকে পাঠান জালাল মাতবর।
সজলের মা তখনই ফোনে বিষয়টি তাকে জানান। খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে সজল দেখেন, তার মাকে চুল ধরে টেনে ঘরের বাইরে আনছেন জালাল মাতবর।
“আমার মামা আর খালাও সেখানে ছিল। এক পর্যায়ে মামা মাতবরের হাতে একটি লাঠি তুলে দিলে জালাল মাতবর সবার সামনে লাঠি দিয়ে আমার মাকে পেটাতে শুরু করে।”
সজল মাকে রক্ষার চেষ্টা করলে তার মামা ও সহযোগীরা তাকে ধরে রাখেন বলে জানান এই তরুণ।
তার মাকে জালাল মাতবর বিভিন্ন সময়ে ‘অশালীন প্রস্তাব’ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন সজল।
সজলের মা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি দুপুরে খেতে বসার পর জালাল মাতবর লোক পাঠিয়ে তার বাড়িতে যেতে বলেন।
“কিছুক্ষণ পর সে নিজে এসে আমাকে একা পেয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। করতে না পেরে টেনে হিঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে মারধর শুরু করে।”
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে জালাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সজলের মায়ের সঙ্গে তার মামার বিরোধ ছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ঝগড়াঝাটিও হয়েছে।
“এর মীমাংসা করার জন্য সোমবার দুপুরে আমি তাকে ডেকেছিলাম। কিন্তু সে না আসায় আমি গ্রামের মাতবর হিসেবে তাকে শাস্তি দিয়েছি।”
তবে সজলের মাকে ‘অশালীন প্রস্তাব’ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন জালাল।
কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পবিত্র কুমার বলেন, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও জখমের চিহ্ন ছিল। সোমবার চিকিৎসা নিয়ে মঙ্গলবার সকালে তিনি বাড়ি ফিরে যান।
কালিয়াকৈর থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, “এ ব্যাপারে একটি মামলা করেছেন ওই নারী। তবে এখনও কাউকে আটক করা হয়নি।”