বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধিকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘গণবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাম দলগুলো।
Published : 27 Aug 2015, 08:57 PM
সরকারের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি বলেছে, গণশুনানিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠিত করতে পারে নাই।
অন্যদিকে সিপিবি-বাসদ জোট এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) শুক্রবার প্রেসক্লাব এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে।
সিপিবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হায়দার আকবর খান রনো ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ এক বিবৃতিতে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, “সরকার জনগণের স্বার্থে কোনো যুক্তি না মেনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের নির্দেশ মেনে ও তাদের সহযোগীদের খুশি করতে জনগণের পকেট কেটে দুর্ভোগ বাড়াতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে বাড়ি ভাড়াসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাবে।
জনমতের মূল্য না দেওয়ায় বিইআরসির সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা প্রমাণ করল এই প্রতিষ্ঠান জনমতের কোনো মূল্য না দিয়ে গণশুনানিকে নাটকে পরিণত করে নিজেকে আবারও প্রশ্নবিদ্ধ করলো।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ব বাজারে যখন তেলের দাম এক তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে তখন বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি কোনো যুক্তিতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এছাড়া গ্যাস খাতেও কোনো লোকসান নেই।
সরকার গ্যাস-বিদ্যুতের এই ‘অযৌক্তিক’ মূল্য বৃদ্ধিতে অনড় থাকলে কঠোর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বাধ্য করা হবে বলে সতর্ক করে দেন নেতারা।
গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সিপিবি-বাসদে যৌথভাবে শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ-বিক্ষোভ ও শনিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুত ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টি বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় দেশেও কমবে বলে আশা করা হলেও তার উল্টো ঘটনা ঘটলো।
গণশুনানিতে অংশ নিয়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি না করার পক্ষে যে সব যুক্তি তুলে ধরা হয়েছিল আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের ঘটনাবলীতে তা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি।
বিবৃতিতে বলা হয়, “ওয়ার্কার্স পার্টি তখনও বলেছে এখনও বলছে, জ্বালানি খাতে অদক্ষতা, দুর্নীতি ও জনস্বার্থ সম্পর্কে সংবেদনশীলতার অভাবে এই অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে জ্বালানি তেলের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছে দলটি।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিইআরসি।
সে অনুযায়ী, গ্যাসের দাম গড়ে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং বিদ্যুতের দাম ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ বাড়ানোয় গ্যাসের মাসিক বিল ২০০ টাকা বাড়িয়ে এক চুলার জন্য ৬০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিইআরসি চেয়ারম্যান এ আর খান জানিয়েছেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন এই মূল্যহার কার্যকর হবে।