মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামে ‘টর্চার সেল’ হিসাবে কুখ্যাতি কুড়ানো ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাড়ি ‘গুডস হিল’ এ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর করার দাবি তুলেছেন সেখানে নির্যাতিতদের কয়েকজন।
Published : 29 Jul 2015, 03:09 PM
তাদের দাবি, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তার বাবা মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের (ফকা) চৌধুরীসহ পরিবারের প্রায় সব সদস্যই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাসহ হত্যা, নির্যাতন ও গুমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
একাত্তরে চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকজন, মুক্তিযোদ্ধা এবং সাধারণ মানুষকে ধরে এনে গণি বেকারির মোড়ে সালাউদ্দিনের বাসভবন গুডস হিলের গ্যারেজে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করা হত বলে জানিয়েছেন কয়েকজন।
তাই একাত্তরে নির্যাতন ও হত্যার স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণে সেখানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর করার দাবি করেন তারা।
ট্রাইব্যুনালে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী ম. ছলিম উল্লাহ বলেন, “একাত্তরে এই গুডস হিলেই মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেককে ধরে এনে নির্যাতন করা হত। এর নেতৃত্ব দিত কাদের চৌধুরী পরিবার এবং তাদের অনুসারীরা।
গুডস হিলের এই গ্যারাজকে বানানো হয়েছিল টর্চার সেল; ২০১১ সালে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল পরিদর্শনে গেলে তাদের নির্যাতন কেন্দ্র দেখান নির্যাতিত সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী ম. ছলিম উল্লাহ।
২০১১ সালের ১২ এপ্রিল সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর গুডস হিলে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের সদস্যরা।
“তাদের পুরো পরিবারই একাত্তর সালে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। আমাকে একাত্তরের ২ এপ্রিল রহমতগঞ্জ থেকে ধরে এনে গুডস হিলে উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়। এর বিভিন্ন কক্ষে আরও অনেককে মারধর করা হয়।”
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ হিসাবে অ্যাখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “সে যে অপরাধ করেছে তার শাস্তি কার্যকর করার পাশাপাশি তার পারিবারিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা উচিত। একজন যুদ্ধাপরাধীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে জনগণের সম্পত্তি করার দাবি জানাচ্ছি।”
টর্চার সেল গুডস হিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বা একাত্তরে নির্যাতিতদের আশ্রয়স্থল হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
একই দাবি জানান চট্টগ্রামের গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা এবং সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দেওয়া কাজী নুরুল আবছার।
তিনি বলেন, “চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যেখানে একাত্তর সালে গণহত্যা চালানো হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে সেখানে স্মৃতিচিহ্ন বা সৌধ করা হয়েছে। গুডস হিলও ছিল চট্টগ্রামের একটি বড় নির্যাতনকেন্দ্র। এখানে লোকজন ধরে এনে নির্যাতন করে হত্যা করা হত।
“একাত্তরে নির্যাতন ও হত্যার স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণে এখানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর হওয়া উচিত।”