জুলাইয়ে ভাঙ্গা থেকে খুলনা ও গোবরা রেলপথ পাকশী বিভাগে হস্তান্তরের সম্ভাবনা আছে।
Published : 02 May 2024, 11:43 PM
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত নতুন ট্রেন চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে, যেটি চালু হলে গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লাগবে তিন ঘণ্টা, বর্তমান রুটে যা ৬ ঘণ্টা থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগছে।
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের গোবরা থেকেও ঢাকায় ট্রেন চালানোর প্রস্তাব এসেছে, ওই ট্রেনটি ঢাকায় আসবে আড়াই ঘণ্টায়।
বর্তমানে ঢাকা থেকে খুলনা রুটে সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেস এবং বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে সব ট্রেন বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে চলাচল করত। বর্তমানে সুন্দরবন এবং বেনাপোল এক্সপ্রেস পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করে। চিত্রা এক্সপ্রেস যায় বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে।
পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনগুলো গন্তব্যে যায় ছয় ঘণ্টায়, বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে যাওয়া আসায় সময় লাগে নয় থেকে ১০ ঘণ্টা।
পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী ট্রেনগুলো চলে ভাঙ্গা-ফরিদপুর-রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ-যশোর হয়ে।
নতুন রুটে ট্রেন চলবে ভাঙ্গা-নড়াইল, যশোরের পদ্মবিলা-নওয়াপাড়া হয়ে। এই রুটে নতুন লাইন নির্মাণের কাজ চলছে। সেটি নির্মাণ কাজ শেষের পথে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশীর বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের কার্যালয় থেকে একটি প্রস্তাব রেলভবনে পাঠানো হয়। এতে ভাঙ্গা জংশন থেকে খুলনা, যশোর ও গোবরা সেকশন চালু হলে ট্রেন চলাচলের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
আগামী জুলাইয়ে ভাঙ্গা জংশন থেকে খুলনা ও গোবরা রেলপথ পাকশী বিভাগের কাছে হস্তান্তরের সম্ভাবনা আছে জানিয়ে প্রস্তাবে বলা হয়, “এই রেলপথ চালু হলে খুলনা এবং গোবরা থেকে অল্প সময়ে ঢাকায় যাতায়াতের সুযোগ তৈরি হবে।”
সম্ভাব্য সময়সূচি
রেলওয়ের পাকশী বিভাগ জানিয়েছে, সকালে ঢাকাগামী যাত্রী এবং বিকালে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি থাকে।
এ অবস্থায় বর্তমানে খুলনাগামী চিত্রা ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোলগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস এই তিনটি ট্রেনের রুট আংশিক পরিবর্তন এবং একটি নতুন ট্রেন যুক্ত হবে।
এই চারটি রেক (ট্রেন বডি) দিয়ে মোট ৮ জোড়া ট্রেন পরিচালনা করবে রেলওয়ে।
প্রস্তাব অনুযায়ী ঢাকা-যশোর (পদ্মবিলা)-খুলনা রুটে চার জোড়া, ঢাকা-ফরিদপুর-দর্শনা রুটে দুই জোড়া, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-গোবরা রুটে এক জোড়া এবং ঢাকা-বেনাপোল রুটে এক জোড়া ট্রেন চলাচল করবে।
এর মধ্যে ঢাকা-যশোর-খুলনা রুটে চারটি, ঢাকা-ফরিদপুর-দর্শনা রুটে দুইটি, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-গোবরা রুটে একটি এবং ঢাকা-বেনাপোল রুটে একটি ট্রেন চলাচল করবে।
চিঠিতে বলা হয়, খুলনা থেকে সকাল ৬টা, দুপুর সাড়ে ১২টা, দুপুর আড়াইটা, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় একটি করে ট্রেন ছেড়ে যাবে। এসব ট্রেন ঢাকায় পৌঁছবে বেলা ৯টা, সাড়ে তিনটা, সাড়ে পাঁচটা এবং রাত সাড়ে দশটায়।
অন্যদিকে ঢাকা থেকে সকাল ৬টা, বেলা সাড়ে ৯টা, দুপুর ১টা, সন্ধ্যা সাতটায় একটা করে ট্রেন ছেড়ে যাবে। এসব ট্রেন খুলনা পৌঁছবে বেলা ৯টা, দুপুর সাড়ে ১২টা, বেলা ৪টা এবং রাত ১০টায়।
ঢাকা-বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস সকাল ১০ টায় ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশে ছাড়বে, পৌঁছবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে এবং বেনাপোল থেকে দুপুর ৩ টায় ছেড়ে গিয়ে ঢাকায় পৌঁছবে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে।
ঢাকা-দর্শনা রুটের প্রথম ট্রেনটি সকাল সাতটায় দর্শনা থেকে ছাড়বে। সেটি ঢাকায় পৌঁছবে ১২টায় এবং ঢাকা থেকে দুপুর ১টায় ছেড়ে দিয়ে দর্শনায় পৌঁছবে বিকাল ৪টায়।
দ্বিতীয় ট্রেনটি ঢাকা থেকে বেলা সাড়ে ৪টায় ছেড়ে দর্শনায় পৌঁছবে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে এবং দর্শনা থেকে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছবে পরদিন ভোর ৫ টায়।
ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের গোবরা পর্যন্ত ট্রেনটি সকাল ৬টায় ছেড়ে এসে ঢাকায় পৌঁছবে সকাল সাড়ে আটটায়। আর ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় ছেড়ে গিয়ে রাত সাড়ে ৮টায় গোপালগঞ্জে পৌঁছবে।
রেলওয়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এসব ট্রেনের জন্য যশোরের পদ্মবিলা স্টেশন থেকে কোটচাঁদপুর, কোটচাঁদপুর-যশোর, পদ্মবিলা-খুলনা রুটে শাটল ট্রেনের মাধ্যমে অন্য এলাকার যাত্রীদের সুবিধা দেওয়া যাবে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশীর বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক নূর মোহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি যাচাইবাছাই করে দেখবেন। আমি বিষয়গুলো একটি অ্যাঙ্গেল থেকে দেখেছি, অন্যরা হয়ত অন্যভাবে দেখবেন। যতটুকু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় ততটুকু তারা করবেন।
“এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে গেলে হয়ত কিছু প্রতিবন্ধকতা আসবে। সেগুলো যদি উৎরানো যায় তাহলে হয়ত এটা বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। আমি আগাম চিঠি দিয়েছি যাতে প্রস্তুতিগুলো নিতে পারে।”