নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ শোয়েব বলেন, “আমরা কাজ করছি, কিন্তু ভোক্তার সচেতনতা নেই।”
Published : 20 Feb 2025, 06:59 PM
সকলের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতের লক্ষ্যে ভোক্তাদের আরও বেশি সচেতন করার তাগিদ এসেছে রাজধানীতে আয়োজিত এক সংলাপে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং ফ্রেন্ডস ইন ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (এফআইভিডিবি) বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলামোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এ সংলাপের আয়োজন করে। এতে কারিগরী ও আর্থিক সহায়তা করে ওয়েল্টহাঙ্গারহিলফি।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ শোয়েব বলেন, “আমরা কাজ করছি, কিন্তু ভোক্তার সচেতনতা নেই। আজকে এখানে নিরাপদ খাদ্য নিয়ে ঢাকা শহরে চালানো একটি সমীক্ষার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু শুধু ঢাকায় চালানো সমীক্ষা দিয়ে ভোক্তার সঠিক মতামত উঠে আসবে না, সেজন্য সারা দেশের মানুষকে নিয়ে সমীক্ষা চালাতে হবে।”
তিনি বলেন, “নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ দেশের নাগরিকদের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করছে। কিন্তু ফুড চেইনের সাথে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এককভাবে জড়িত নয়। বিএসটিআইসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে নিয়ে কাজ করতে হয়। সবাই যার যার যায়গা থেকে ভোক্তার স্বার্থে কাজ করছে।
“আমাদের মূল লক্ষ্য-সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গেও নিয়মত যোগাযোগ করছি। ক্যাবের যে কোনো কার্যক্রমেও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ পাশে থাকবে।”
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন বলেন, “একটা সময় আমরা শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতাম। এখন খাবারের মানের চিন্তাও করি, যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা যায়। অর্থাৎ এখন শুধু খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করলেই হবে না, ভোক্তার জন্য নিরাপদ খাদ্যও নিশ্চিত করতে হবে।”
নিরাপদ খাদ্যের জন্য ভোক্তাকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “পাবলিক এনফোর্সমেন্ট ছাড়া আমাদের কাজ করা কঠিন। সেজন্য ভোক্তাকে অবশ্যই সোচ্চার হতে হবে। আর এর জন্যে শুধু অভিযোগ করা নয়, সরকার যাতে কাজ করতে বাধ্য থাকে, সেই বিষয়েও আওয়াজ তুলতে হবে ভোক্তাকেই।”
সংলাপে বিএসটিআইয়ের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “দেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের বিষয়ে কিএসটিআই কাজ করছে। সেজন্য খাদ্য উৎপাদনের সাথে জড়িতদের নিয়ে নিয়মিত অবহিতিকরণ সভা করা হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদনে বিএসটিআইয়ের মানদণ্ড অনুযায়ী না হলে জরিমানাসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে ভোক্তার নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতের জন্যে নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে, ভূমিকা পালন করতে হবে।”
ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “নিরাপদ খাদ্য নিয়ে মোটামুটি সচেতন হয়েছেন নাগরিকেরা, কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। শুধু ঢাকা শহরের চিত্রের উপর ভিত্তি করে দেশের সামগ্রিক চিত্র বোঝা সম্ভব নয়। এর জন্যে গ্রামের মানুষের মন্তব্যও নিতে হবে।”
ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, “সারাদেশের প্রতিটি জেলাসহ ৩৪০টি উপজেলায় ক্যাবের সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে। আমরা ভোক্তার অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করছি। বিএসটিআইসহ অনেকই কাজ করছে। তাই এই বিষয়ে (নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে) যদি বিএসটিআইয়ের সদিচ্ছা থাকে, তাহলে আমরা এক সাথে কাজ করতে চাই।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এফআইভিডিবির প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মো. হাসনাইন এবং মূখ্য আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক খালেদা ইসলাম।
ক্যাবের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আহমেদ একরাম উল্লাহর সঞ্চালনায় সংলাপে ক্যাবের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক যুগ্মসচিব মো. শওকত আলী খান এবং সাধারণ নাগরিক সমাজের আহবায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।