এ বিষয়ে পরে রায়ের তারিখ ঠিক করা হবে।
Published : 27 Apr 2025, 01:14 PM
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাত বছরের সাজার বিরুদ্ধে সাংবাদিক শফিক রেহমানের করা আপিল শুনানি শেষ হয়েছে।
শুনানিতে এই মামলাকে ‘হয়রানিমূলক’ বর্ণনা করে শফিক রেহমানের খালাস চেয়েছেন তার আইনজীবী। খালাসের আবেদনে ‘আপত্তি নেই’ বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
এ বিষয়ে রায়ের তারিখ পরে ঠিক করা হবে বলে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজের আদালত জানিয়েছেন।
রোববার এই আদালতে আদালতে শফিক রেহমানের পক্ষে সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ শুনানি করেন।
তিনি বলেন, “হাসিনাপুত্র জয়কে কথিত অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা এটি। ভিকটিম নিজে মামলা দায়ের করেনি। পুলিশ অতিরিক্ত ইন্টারেস্টে মামলা দায়ের করে। ৯০ বছর বয়সী লোক। তাকে এ মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নাই।
“মামলায় ১২ জন সাক্ষী দিয়েছেন। জয়ও এ মামলায় সাক্ষ্য দিছে। যেদিন জয় এ মামলায় সাক্ষ্য দেয়, দেখলাম সাক্ষ্য শেষে বিচারক তার পিছে পিছে দৌঁড়াচ্ছেন।তাহলে দেখেন কেমন বিচার হয়েছে।“
এই মামলায় যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান ছাড়াও আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ আরও চারজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
তারা হলেন-জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া। তাদের মধ্যে সম্পাদক মাহমুদুর রহমান খালাস পেয়েছেন
এই মামলাতে ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ বর্ণনা করে আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, “তার (শফিক রেহমান) খালাসের প্রার্থনা করছি।“
রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট আদালতের অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ খলিলুর রহমান (খলিল) বলেন, “রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা। তিনি (শফিক রেহমান) একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক। খালাস দিলে আমাদের আপত্তি নেই।“
শুনানিতে শফিক রেহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের’ মামলায় ২০২৩ সালের অগাস্টে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় শফিক রেহমানকে।
ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০১৬ সালে পাঁচ মাস কারাগারেও থাকতে হয়েছিল শফিক রেহমানকে। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে চলে যান তিনি।
ছয় বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে গত ১৮ অগাস্ট দেশে ফেরেন শফিক রেহমান।
এরপর গত ২১ নভেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ পূর্বক আপিল দায়েরের শর্তে শফিক রেহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত কর হয়।
আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেসবাহ ওইদিন বলেছিলেন, “আমরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করি এবং এ সাজার বিরুদ্ধে আপিল করে। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে ৫ হাজার টাকা মুচলেখায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি আপিল গ্রহণ করেন।“
জামিন পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিক শফিক রেহমান বলেন, “এখানে একজন অনঅভিপ্রেত ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যার নাম সজীব ওয়াজেদ জয়। আমি তার নাম উচ্চারণ করতে চাচ্ছিলাম না। তার অপহরণ মামলায় আজকে আমি এখানে।“
এটিকে ‘তথাকথিত মামলা’ আখ্যায়িত করে শফিক রেহমান বলেছিলেন, “যেটা নিউ ইয়র্কে ডিসমিস করা হয়েছে। নিউ ইয়র্কে বলে দেওয়া হয়েছে এই মামলায় শফিক রেহমানের নাম যেন কোথাও না থাকে। সে মামলার সারসংক্ষেপ ও কাগজপত্র দেখতে চাইলে আমার আইনজীবীরা আপনাদের দেখাতে পারবে। আমার নাম আমেরিকাতে নাই, যেখানে ১০ হাজার মাইল দূরে মামলা হয়েছিল।“
তিনি বলেছিরেন, “আপনাদের আমি চ্যালেঞ্জ দিতে চাই। আপনারা খুঁজে বের করুন সজীব ওয়াজেদ জয় কীভাবে এবং কেন আমেরিকা যেতে হয়েছিল তাকে? আপনারা খুঁজে বের করুন আব্দুল আওয়াল মিন্টুর বাসার সামনে মধ্যরাতে জনতা ব্যাংকের একজন স্টাফ কীভাবে পিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিল। কে গাড়ি চালাচ্ছিল এবং সে কোথায় এখন এইটা আপনারা খুঁজে বের করেন তাহলে সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।“
হাসিনাপুত্র জয়কে 'হত্যাচেষ্টার' মামলায় শফিক রেহমানের জামিন
জয়কে 'হত্যার ষড়যন্ত্র': শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানের ৭ বছরের সাজা