মঙ্গলবারই পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয় বর্ষিয়ান রাজনীতিক মেননকে।
Published : 27 Aug 2024, 06:51 PM
এক মামলায় পাঁচ দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষের দিনই আরেক মামলায় ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে ছয় দিনের রিমান্ড পেয়েছে পুলিশ।
আন্দোলন চলাকালে পোশাককর্মী রুবেল হত্যার ঘটনায় ঢাকার আদাবর থানার মামলায় তাকে রিমান্ডে দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান শুনানি শেষে রাশেদ খান মেননকে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এসব তথ্য দিয়েছেন।
মঙ্গলবারই পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয় বর্ষিয়ান রাজনীতিক মেমনকে।
এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আদাবর থানার পরিদর্শক মিন্টু চন্দ্র বণিক রুবেল হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আদালত তা গ্রহণ করে।
এর আগে ২৩ অগাস্ট নিউ মার্কেট থানার এক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের হেফাজতে পেয়েছিল পুলিশ। মঙ্গলবার সেই রিমান্ড শেষ হলে তাকে আবার আদালতে তোলা হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই নিউ মার্কেট এলাকায় গুলিতে আব্দুল ওয়াদুদ (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন নিহতের স্বজন আব্দুর রহমান। এ মামলায় ২২ অগাস্ট গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সাবেক মহাজোট সরকারের মন্ত্রী মেননকে।
গ্রেপ্তারের পর দিন মেননকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করলেও তার পক্ষের এক আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে বলেন, “তিনি কোনো নির্যাতন-অত্যাচারের পক্ষে ছিলেন না। তার রাজনৈতিক জীবন পরিচ্ছন্ন ছিল। তিনি বয়স্ক। রিমান্ড না দিয়ে তাকে জামিন দেওয়া হোক।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “উনি সাম্যের কথা বলতেন, শ্রেণিহীন সমাজের কথা বলতেন। কিন্তু বৈষম্যহীন আন্দোলেনর সময় তিনি শেখ হাসিনার পতন ঠেকাতে তার সঙ্গে মিটিং করেন।
“কীভাবে আন্দোলন দমন করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ দেন। এই সমস্ত হত্যার দায় তার রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করা হোক।”
নিউ মার্কেট থানায় দায়ের করা ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় মেনন ছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে সিলেটে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আহত এক ছাত্রদল নেতা। সেখানেও আসামি করা হয়েছেন রাশেদ খান মেননকে।
আন্দোলন চলাকালে মিরপুরে এক শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় আরেক মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা পড়েছে।
অপরদিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে ‘আপত্তিকর মন্তব্যের’ অভিযোগে মেননের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুল ইসলামের আদালতে আরেকটি মামলা করেছেন মো. জিয়াউল হক নামে এক আইনজীবী।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির সভাপতি মেনন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এবং পরে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ আসন থেকে (উজিরপুর-বানারীপাড়া) তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।