ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সত্তা’ হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
Published : 23 Oct 2024, 11:43 PM
‘সন্ত্রাসী’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল হয়েছে।
বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে সমাবেশ করেন। তারা ‘এই মুহূর্তে খবর এল, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হল’…এমন স্লোগান দেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, “আজকে খুনি হাসিনাও নাই, কাদেরও নাই। ছাত্রলীগকেও আজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মধুর ক্যান্টিনে পাঁচ মিনিটের মিছিল দিয়ে তারা আজ পালিয়ে গিয়েছে। তাদেরকে বাংলার মাটিতে আর রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।
“এই মুজিববাদী খুনি শেখ হাসিনার দোসরদের গর্ত থেকে বের করে এনে জেলে ভরতে হবে। বাংলার মাটিতে মুজিববাদের জায়গা নাই।”
আরেক সমন্বয়ক লিয়ন বলেন, “ছাত্রলীগ শুধু ছাত্র নামটা ব্যবহার করেছে। সেখানে কোনো ছাত্র ছিল না। জুলাই আন্দোলনে হলে হলে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ঢুকে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগ হামলা করেছে।
“ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায় আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি ছাত্রলীগের মত আচরণের চেষ্টা করে তাদেরও একই পরিণতি হবে।”
আওয়ামী লীগ সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে ‘সন্ত্রাসী’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এই ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে কোটা সংস্কার ও সরকার পতন আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতা ’হত্যা’ ও অসংখ্য মানুষের ‘জীবন বিপন্ন‘ করা এবং বিভিন্ন সময় ‘সন্ত্রাসী’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী ‘সন্ত্রাসী সত্তা‘ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ ’বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করিল।”
প্রজ্ঞাপনে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের কারণ হিসেবে ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ছাত্র সংগঠনটির বিভিন্ন সময়ের ‘সন্ত্রাসী’ কার্যকলাপের বিষয়ে তুলে ধরা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বৃহস্পতিবারের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। ওই সময়ের আগেই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুন-